ফতুল্লায় নবজাতক শিশুকে বিক্রির ঘটনার মূল হোতা লাকী বেগম(৪৫) কে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। রোববার (১৭ এপ্রিল) রাতে তাকে মাসদাইর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর সোমবার সকালে তাকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক হারেছ শিকদার জানান, রোববার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নবকাতক শিশুকে বিক্রির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠালে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
এর আগে পুলিশ শনিবার রাতে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার দক্ষিন পাশা থেকে এক বছর পূর্বে বিক্রি করা শিশুটি কে উদ্ধার করে। এ সময় আটক করা হয় শিশুটিকে কিনে নেয়া রানু(৪০) নামক এক নারীকে।
বাচ্চা ক্রয় কারী আটককৃত রানু বেগম জানায়, তার একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে।কিন্ত ছেলেটি প্রতিবন্ধী। তাই সে একটি ছেলে দত্তক বা ক্রয় করার জন্য পরিচিতজনদের বলে রেখেছিলো। এক বছর একমাস পূর্বে শ্যামপুর আফসার করিম রোডের মৃত আয়াত আলীর স্ত্রী সুমা তাকে ফোন করে জানায় একটি বাচ্চা বিক্রি হবে।সে তখন ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চাটি ক্রয় করে। বাচ্চাটির নাম রেখেছেন ইউসুফ।
সুমা জানায়,তার বোন ঝর্নার মাধ্যমে জানতে পারে যে একটি বাচ্চা বিক্রি হবে।পরে সে তার মামী রানু বেগম কে জানালে সে আগ্রহ প্রকাশ করে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চাটি কিনে নেয় অপরদিকে ঝর্না জানায়, আলীগঞ্জস্থ বিডব্লিউটি কলোনীর শাহালমের ভাড়াটিয়া ফারুকের স্ত্রী রুবিনা তাকে ফোন করে জানায় বাচ্চা বিক্রির কথা।
রুবিনা জানায়, লাকী বেগম তাকে বাচ্চা বিক্রির কথা জানায়।পরে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাচ্চাটি কিনে নেয় রানু বেগম। লাকী টাকা নেয় এবং বাচ্চাটিকে তার মা নিজেই রানু বেগমের হাতে তুলে দেয়।
বাচ্চাটির মা রানী বেগম পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার বাদারতলীর হান্নান চৌকিদারের স্ত্রী। তারা স্ব- পরিবারে বর্তমানে ফতুল্লা থানার আলীগঞ্জ বিডব্লিউটিএর কলোনীতে বসবাস করে আসছে।
তিনি জানায়, দুই বছর পূর্বে অভিযুক্ত লাকী বেগমের নিকট থেকে সে পাঁচ হাজার টাকা ঋন গ্রহন করে। গত ২ বছরে ঐ টাকার বিপরীতে লাকী বেগম কে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করে। এমনকি এক বছর পূর্বে সুদের টাকা পরিশোধে তার নবজাতক সন্তান কে বিক্রি করে দিয়েও সম্পূর্ন টাকা আত্মসাৎ করে লাকী বেগম। পরবর্তীতে আবার বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) পুনরায় লাকী বেগম বাদীর বাড়ীতে এসে আসল এবং সুদ সহ ১ লাখ ৩ হাজার টাকা দাবী করে অন্যথায় তাকে মারধর করা হবে জানায়।