জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরের দিন কিলোমিটারে ৩৫ পয়সা বাস ভাড়া বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা বা বিআরটিএ। অথচ, নারায়ণগঞ্জের পরিবহন মালিকরা সেই ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ২৭ পয়সা বাড়িয়েছে।
রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় ছেড়ে যাওয়া বাস গুলোর যাত্রীদের থেকে প্রতি টিকেটে ২০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা নেওয়া হয়েছে।
সাধারণ যাত্রী ওমর ফারুক জানান, ‘জীবিকার তাগিদে ঢাকায় যেতে হবে, তাই বাধ্য হয়েই যাচ্ছি। না হলে অতিরিক্ত ভাড়া দিতাম না।’
বিআরটিএর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মহানগরে প্রতি কিলোমিটারের জন্য ৩৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সা।
২০১১ সালে পরিবহন মালিকেরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের দূরত্ব ২১ কিলোমিটার দাবি করেছিলেন। পরে তাঁরা সাড়ে ১৯ কিলোমিটার দাবি করেন। সে সময় আরটিসির চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে বিআরটিএ প্রতিনিধি, পরিবহন মালিক প্রতিনিধি ও যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের প্রতিনিধিদল সরেজমিন মেপে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট থেকে নারায়ণগঞ্জ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত দূরত্ব পান সাড়ে ১৭ কিলোমিটার। ২০১৩ সালে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হওয়ার পর দূরত্ব দুই কিলোমিটার কমে সাড়ে ১৫ কিলোমিটারে দাঁড়ায়।
যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের মতে, ‘গত ৭ নভেম্বরের তালিকা অনুযায়ী, এই রুটের ভাড়া দাঁড়ায় টোল ছাড়া ৩০ টাকা ৬২ পয়সা। ফ্লাইওভারের টোল যোগ করলে হবে ৩৫ টাকা ৮২ পয়সা। কিন্তু যাত্রীপ্রতি ভাড়া নেওয়া হয়েছে ৪৫ টাকা করে। এখন আবারও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পরে সেই ভাড়া ২০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা বাস, মিনি বাস, দুরপাল্লা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি দিদারুল ইসলাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার দৌরত্ব ২১ কিলোমিটার। এখন সাইনবোর্ডে ইউটার্নের জন্য ৩ কিলোমিটার বেড়েছে। তাই ভাড়াও বেড়েছে। আমরা ভাড়া বাড়াতে আগ্রহী না, কিন্তু জ্বালানী তেলের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ভাড়া বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছি।’
তবে, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা যেতে ১৮ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে সানার পাড় হয়ে নারায়ণগঞ্জ আসতে এক কিলোমিটার বাড়ার কারণে ১৯ কিলোমিটার হয়েছে। গড়ে সাড়ে ১৮ কিলোমিটার। যদি ১৯ কিলোমিটার দুরত্বেও হিসাব করা হয় তবে বিআরটিএর নতুন নির্ধারিত হারে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের বাস ভাড়া কোন ভাবেই ৪১ টাকা ৮০ পয়সার বেশী হবে না। আমরা লক্ষ করছি নারায়ণগঞ্জে পরিবহন সিন্ডিকেট কতিপয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সাথে অনৈতিক আর্থিক সম্পর্ক তৈরী করে বছরের পর বছর নারায়ণগঞ্জবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।