প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হয়েও করোনারভাইরাস প্রতিরোধী টিকা পুশ করলেন রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এনামুল হক। এক বৃদ্ধের শরীরে টিকা পুশ করে ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে তিনি বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রশিক্ষণ ছাড়া একজন জনপ্রতিনিধি টিকা পুশ করার ঘটনায় অনেকেই বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
টিকা পুশ করার সময়ে ওই এমপির পাশে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানকার কেউ একজন সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
এমপি নিজের হাতে টিকা পুশের পর সেখানে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইপিআই টেকনিশিয়ান টিকাকেন্দ্রে আসা অন্যদের শরীরে টিকা পুশ করেন। এই কেন্দ্রে মোট ৬০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনের পর এমপি এনামুল হক বলেন, টিকা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। সবাইকে টিকা নিতে হবে। সুস্থ থাকতে চাইলে টিকা নেওয়া জরুরি। গ্রামের মানুষের কথা চিন্তা করে আওয়ামী লীগ সরকার দেশবাসীকে মহামারি করোনার কবল থেকে রক্ষায় বিনা মূল্যে টিকার ব্যবস্থা করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন দলীয় নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমপিকে বিতর্কিত করার জন্য অতি উৎসাহীরা এই কাজ করেছেন। প্রশিক্ষিত ব্যক্তি ছাড়া কারও টিকা পুশ করা ঠিক না।
এমপির টিকা পুশের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান এমপির পাশে থেকে তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এটা দোষের কিছু না। টিকাগ্রহণকারী ওই ব্যক্তির কোনো সমস্যা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
তবে দ্বিমত পোষণ করে রাজশাহীর সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া কারও টিকা পুশ করা ঠিক না।’ এমপির কীভাবে টিকা পুশ করলেন, তা নিয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানীর সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিল কুমার সরকার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার, মাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসলাম আলী প্রমুখ।