সুপার টুয়েলভে টানা তিন হারে বিশ্বকাপ থেকে ‘বিদায়’ নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৩ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শারজায় ক্ষণে ক্ষণে বাঁক বদল নেওয়া ম্যাচটা দুই দলের জন্যেই ছিল টুর্নামেন্টে টিকে থাকার।
জিতলে সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকবে, আর হারলে বাকি দুই ম্যাচের আগেই বিদায়ঘন্টা বাজবে। সেই ঘন্টাটা সবার আগে বাংলাদেশেরই বাজল। ক্যারিবিয়ানদের ১৪৩ রানের জবাবে এদিন ওপেনিংয়ে উঠে আসেন সাকিব আল হাসান। নাঈম শেখের সঙ্গে সাকিবের জুটিটা এগোয় ২১ রান পর্যন্ত। আজও ব্যাটিংয়ে সুবিধা করতে পারেননি সাকিব। ১২ বলে ৯ রান করে আন্দ্রে রাসেলের বলে আউট হয়ে যান। সাকিবের বিদায়ের পর উইকেটে আসেন লিটন দাস। ওপেনিংয়ে টানা ব্যর্থতার পর জায়গা বদল করে অবশেষে রান পেলেন লিটন।
নাঈমের বিদায়ের পর সৌম্য সরকারের সঙ্গে লিটনের ৩১ রানের জুটিটাই বাংলাদেশকে ম্যাচে রাখে। তবে দ্রুত মুশফিকের বিদায়ের পর কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে লিটনের সঙ্গে দলকে টেনে নেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ চার ওভারে ৩৩ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। সেখান থেকে শেষ ওভারে ১৩ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। প্রথম বলে দুই রান নেন আফিফ। দ্বিতীয় বলে ১ রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন মাহমুদউল্লাহকে। শেষ বলে মাহমুদউল্লাহ কোনো রান নিতে পারলে ৩ রানে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফিল্ডিংয়ে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। দুই বাঁহাতি ব্যাটারকে ওপেনিং করতে দেখে মাহমুদউল্লাহ বোলিংয়ের উদ্বোধন করান মেহেদী হাসানকে দিয়ে। বাঁহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে সব সময় সফল মেহেদী প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে এনে দিতে পারতেন সাফল্য। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ব্যাটের কানায় লাগায় এলভিডব্লু থেকে বেঁচে যান এভিন লুইস। দ্বিতীয় ওভারে গতির ঝড়ে লুইস ও ক্রিস গেইলকে কাঁপান চোটে পড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের পরিবর্তে দলে ঢোকা তাসকিন আহমেদ। তৃতীয় ওভারে মেহেদীর বলে ক্যাচ তুলে আউট হন গেইল।
পঞ্চম ও সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মেহেদী গেইল ও হেটমায়ারকে ফেরালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরবোর্ড হয়ে যায় ৩২–৩। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই চাপটা আরও বাড়ত যদি রোস্টন চেজের রিটার্ন ক্যাচটা ধরতে পারতেন। সেটি না হলেও আঁটসাঁট বোলিংয়ে ক্যারিবিয়ানদের বেশ চেপেই ধরেন বাংলাদেশের বোলাররা। ১০ ওভার শেষে মাত্র ৪৮ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চেজ আর পোলার্ড উইকেট বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, কিন্তু রানই বের করতে পারছিলেন না। সেই হতাশা থেকেই কিনা ১৬ বলে ৮ রান করা পোলার্ড রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। কিন্তু এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাজঘরে যেন নেমে আসে চূড়ান্ত হতাশা। চার–ছক্কার ঝড় তোলার জন্য নামা রাসেল কিনা কোনো বল না খেলেই আউট। তাসকিনের বলটা সোজা ব্যাটে সামনে ঠেলে দিয়েছিলেন চেজ। সেই বল তাসকিনের পা ছুঁয়ে ভেঙে দেয় অপর প্রান্তের উইকেট। আগেভাগে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে পড়া রাসেলকে আউট দিতে থার্ড আম্পায়ারের সহায়তাও লাগল না মাঠের আম্পায়ারের।
শেষ পর্যন্ত মোস্তাফিজের শেষ ওভারে তিন ছক্কায় ১৪২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই লক্ষ্যটাই তাড়া করতে পারেনি বাংলাদেশ।