রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের বাজেট সভা বর্জন করেছেন বলে জানিয়েছেন সদস্যদের একাংশ। বাজেট সভা ভার্চুয়ালি হওয়ায় সভা বর্জন করেন তারা। তবে পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, কোভিড-১৯ এ বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করা হয়। সরকারি বিভিন্ন দফতর এভাবেই বিভিন্ন জরুরি সভা সম্পন্ন করছেন। সে অনুযায়ী স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জেলা পরিদের বাজেট সভা সম্পন্ন হয়েছে। বাজেটের সিদ্ধান্ত নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত থাকলে তা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
সোমবার (২৮ জুন) বেলা ১১টায় ভার্চুয়ালি জেলা পরিষদের বাজেট সভার আয়োজন করা হয়েছিল। জেলা পরিষদ সূত্র জানায়, সকল সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সময়ের পূর্বেই অনলাইনের ‘জুম’ লিংক ও পাসওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছিল। তবে পরিষদের সদস্যদের ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে অনভিজ্ঞ হওয়ায় জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আসেন। পরবর্তীতে তারা আর ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেননি। তবে সভায় সংযুক্ত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
তবে সভায় অংশ না নেওয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান অ্যাড. মাহমুদা মালা বলেন, সরাসরি বাজেট সভার দাবি ছিল তাদের। সেই দাবি উপেক্ষা করায় সভা বর্জন করেছেন তারা। সভা বর্জন করলেও এবার বাজেটে সদস্যদের বরাদ্দ এক কোটি টাকা দাবি করেন। এ সময় জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে সদস্য মজিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাড. নূরজাহান, মাহবুবুর রহমান রোমান, আলী নূর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভা বর্জনের বিষয়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষরও করেছেন তারা।
সম্মেলন কক্ষে সভা বর্জন নিয়ে ও দাবি-দাওয়া নিয়ে সদস্যদের মধ্যে বাদানুবাদও হয়। এক পর্যায়ে জেলা পরিষদের তরুণ সদস্য আলী নূর ও মাহবুবুর রহমান রোমান তর্কে জড়িয়ে পড়েন। দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও চলে। পরে উপস্থিত অন্য সদস্যরা তাদের নিভৃত করেন।
এদিকে বাজেট সভা প্রসঙ্গে পরিষদ সদস্যরা সাংবাদিকদের বলেন, গতবার ২৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়। ওই বাজেটে সদস্য প্রতি ৪০ লাখ টাকা করে মোট ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবার তারা এক কোটি টাকা বরাদ্দ দাবি করেন। একই সাথে করোনাকালীন ত্রাণ বিতরণ ও নগদ অর্থ প্রদানের হিসাবও চেয়েছেন তারা। তবে বাজেট সভায় অংশ না নেওয়ায় এসব বিষয় উত্থাপন করার কোনো সুযোগ তারা পাননি। ফলে অনলাইন সভা না করে সরাসরি সভার মাধ্যমে অন্য আরেকদিন বাজেট ঘোষণা করার দাবি জানান তারা।
তবে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, বাজেট সভা নিয়মমাফিক সম্পন্ন হয়েছে। পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অধিকাংশ সদস্য ও কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এবার ২৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, অনলাইনে বাজেট সভা হবে তা পূর্বেই সকলকে জানানো হয়েছিল। সকলের তাতে সম্মতিও ছিল। সম্মতি যদি না থাকতো তাহলে ভিন্ন পথে যাওয়া যেত। বাজেট সভা সম্পন্ন হয়েছে। তাতে ১২-১৩ জন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন। তবে অতিরিক্ত বরাদ্দের যে বিষয় সদস্যরা বলছেন তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।