আল্লাহ তাআলার কাছে চারটি মাস অধিক সম্মানিত। পবিত্র কোরআনুল কারিমে চারটি মাস বিশেষ সম্মানিত হওয়ার কথা উল্লেখ হয়েছে। বছরের বার মাসের ভেতর এই চার মাসের তাৎপর্য ও ফজিলত অনেক বেশি।
পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ যেদিন আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন, সেইদিন থেকেই মাসগুলোর গণনা আল্লাহ তাআলার নিকট তার বিধান মতে বারটি। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৩৬)
এই চারটি মাসের অন্যতম হলো জিলহজ মাস। আর এ মাসের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও ফজিলতপূর্ণ সময় হলো— ‘আশারায়ে জিলহজ’ বা জিলহজের প্রথম দশ দিন।
জিলহজ মাসের প্রথম দশকের গুরুত্ব, মাহাত্ম্য ও ফজিলত অপরিসীম। কেননা, আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে এই দশকের রাতের শপথ করেছেন। তিনি বলেন, ‘শপথ ফজরের, শপথ দশ রাতের’ (সুরা ফাজর, আয়াত : ১-২)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও মুজাহিদ (রহ.)-সহ অনেক সাহাবি, তাবেয়ি ও মুফাসসির বলেন, এখানে ‘দশ রাত্রি’ বলতে জিলহজের প্রথম দশ রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরু ইবনি কাসির : ৪/৫৩৫)
এই দশ দিনের নেক আমল আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে প্রিয়। হাদিস শরিফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস শরিফে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘
‘আল্লাহর নিকট জিলহজের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও (এর চেয়ে উত্তম) নয়? তিনি বললেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে হ্যাঁ, সেই ব্যক্তির জিহাদ— যে নিজের জান-মাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য বের হয়েছে। অতপর কোনো কিছু নিয়ে ঘরে ফিরে আসেনি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৩৮; সহিহ বুখারি, হাদিস : ৯৬৯; জামে তিরমিজি, হাদিস : ৭৫৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৭২৭; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৯৬৮)
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীর সর্বোত্তম দিনগুলো হলো— জিলহজের দশদিন। জিজ্ঞাসা করা হলো, আল্লাহর রাস্তায়ও কি তার সমতুল্য নেই? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায়ও তার সমতুল্য নেই। তবে ওই ব্যক্তি যার চেহারা ধুলিযুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ শাহাদাত লাভ করেছে।’ (মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস : ১১২৮; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদিস : ২০১০; মাজমাউল জাওয়াইদ : ৪/৮)