মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ অপরাহ্ন

জিন তাড়ানোর নামে ঝাড়-ফুঁক, মাদরাসাছাত্রীর মৃত্যু

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২, ৪.১৫ এএম
  • ১৪৪ বার পড়া হয়েছে

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জিন তাড়ানোর জন্য কবিরাজের দেওয়া ঝাড়-ফুঁকে লিমা আক্তার তামান্না (১৪) নামের এক মাদরাসা ছাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মৃত তামান্না উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের বাঁশহাটি গ্রামের মো. আব্দুর রশিদের মেয়ে। স্থানীয় একটি মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। অভিযুক্ত কবিরাজ আমেনা বেগম (৪৫) নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি বাঁশহাটি গ্রামে মেয়ের জামাই মো. রমজান মিয়ার বাসায় থেকে কবিরাজি করতেন। তার সহযোগী হিসেবে ছিলেন জালাল ও কাশেম।

তামান্নার বাবা রশিদ মিয়া বলেন, ‘বেশ কিছু দিন যাবত তামান্নার কোমর ব্যথা করে বলে জানায়। পরে তাকে ওষুধ খাওয়ালে ভালো হয়ে যায়। কয়েক দিন পর আবার কোমর ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়ে তামান্না। এ সময় কোমর, মাথা ও শরীর ব্যথার পাশাপাশি খিচুনিও হতো। পরে কবিরাজ আমেনা বেগমের দুই সহযোগী জালাল ও কাশেম মেয়ের চিকিৎসা করবে বলে জানায়।’

রশিদ আরও বলের, প্রথম দিন তামান্নাকে নিয়ে কবিরাজের বাড়িতে প্রায় চার ঘণ্টা ঝাড়-ফুঁক দেওয়া হয়। এতে তামান্না আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সোমবার রাতে দুই সহযোগী নিয়ে আমার বাড়িতে এসে আবার চিকিৎসা চালান ওই কবিরাজ। রাতভর তার মুখ চেপে ধরে নাক দিয়ে আগরবাতি ও কাপড় পোড়া ধোঁয়া দেওয়া হয়। এতে তামান্না জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ সময় জিন চলে গেছে বলে কবিরাজ ও তার দুই সহযোগী চলে যায়। তামান্নার জ্ঞান না ফেরায় মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মমেক হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে নেওয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে বের করলেই সে মারা যায়।’

এ বিষয়ে স্থানীয় জাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান আকন্দ হলুদ জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার দিন সারারাত ওই মেয়ের মুখ বন্ধ রেখে নাক দিয়ে আগরবাতি, ধোপ, নেকড়া পুড়িয়ে ধোঁয়া দেয়। এতে মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। সকালে মেয়ের বাবা আমাকে মোবাইলে বিষয়টি জানালে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেই। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোস্তাছিনুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। অনেক আগেই কিশোরীর দাফন করা হয়েছে। তবে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort