শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন

গণঅভ্যুত্থানে আহত-নিহতের পরিবারকে সহায়তায় গঠিত হলো ফাউন্ডেশন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩.৪৮ এএম
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মৃতি ধরে রাখতে সরকার তার যাত্রা লগ্নে “জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন” নামে একটি ফাউন্ডেশন গঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সকল শহিদ পরিবার এবং আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা সহ তাদের পরিবারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করছে জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনে দান করার জন্য দেশের সকল মানুষ এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, গণ-অভ্যুথানে সকল শহিদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে। সকল আহত শিক্ষার্থী শ্রমিক জনতার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করবে। আহতদের দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহিদদের পরিবারের দেখাশোনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন নতুন তথ্য পাওয়ার ভিত্তিতে এই তালিকা হাল নাগাদ করা হতে থাকবে।

এসময় ড. ইউনূস বলেন, গত মাসে কুমিল্লা-নোয়াখালী সিলেট অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা এসব এলাকার মানুষকে হতভম্ব করে দিয়েছে। এখানে বেশিরভাগ এলাকায় কোনো দিন বন্যা হয়নি। তারা বন্যা মোকাবিলা করায় অভ্যস্ত নন। দেশপ্রেমিক সশস্ত্রবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে বন্যা আক্রান্ত সবাইকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে। সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনী পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় করে একযোগে কাজে নেমে পড়ার ফলে মানুষের দুর্ভোগ কম হয়েছে। এর পরপরই এনজিও এবং সাধারণ মানুষ দেশের সকল অঞ্চল থেকে দলে দলে এগিয়ে এসেছে। আমি বিশেষ করে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দেশের সকল দুর্যোগকালে তারা সবসময় আন্তরিকভাবে এগিয়ে এসেছে। বিশেষ করে বন্যা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে তাদের সৈনিক এবং অফিসাররা দিনের পরদিন যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছে তার কোনো তুলনা হয় না। জনজীবনে স্বস্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা অনন্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যকে আমি ধন্যবাদ জানাই তাদের সততা, ত্যাগ ও অসীম দেশপ্রেমের জন্য। দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বন্যা, খরা, ঝড়, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় সহ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগে আপনারা সকলের শেষ ভরসার স্থান। দেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে আপনারা দেশের মানুষের পাশে থেকেছেন। দেশের স্বাধীনতার পক্ষে, সার্বভৌমত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দেশ গঠনেও আপনারা সবার আগে এগিয়ে এসেছেন। বিগত জুলাই হতে শুরু হওয়া গণ অভ্যুত্থান, বন্যা, নিরাপত্তা প্রদান, অস্ত্র উদ্ধার সহ সকল কার্যক্রমে আপনারা সফল ভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে আসি আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, বন্যা আমাদের জনজীবনে আরেকটি দিক উন্মোচন করলো। দেশের সকল জায়গায় মানুষের সক্রিয় সহানুভূতির জোয়ার উঠেছিল অবিশ্বাস্য মাত্রায়। ব্যবসায়ী, অর্থবান ব্যক্তিরা যেমন তাদের অর্থ নিয়ে স্ব:তস্ফুর্তভাবে এগিয়ে এসেছিল, তেমনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সাধারণ মানুষ, স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা জোয়ারের ঢলের মতো যার যার সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে এসেছে। অনেকেই ছুটে গেছে বন্যার্তদের সহযোগিতা করার জন্য। এনজিওরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে গেছে তাদের সহায়তা নিয়ে। তাদের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি এনজিও নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি কীভাবে সরকার তাদের কাজের সঙ্গে সরকারের উদ্যোগকে সমন্বিত করতে পারে সেটার কাঠামো তৈরি করে দেওয়ার জন্য। বন্যা এখন চলে গেছে। কিন্তু পুনর্বাসনের কঠিন কাজ আমাদের সামনে রয়ে গেছে। সকলের সহযেগিতায় আমরা পুনর্বাসনের কাজটি সফলভাবে সমাধান করতে চাই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort