ভাঙ্গা, ফরিদপুর: ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের খাটরা গ্রামে প্রয়োজনহীন কালভার্ট নির্মাণ, নিম্নমানের রাস্তা সংস্কার ও প্রকল্পের অর্থের অপচয় জমি জবর দখল নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। গ্রামের উন্নয়নের নামে সরকারি তহবিলের অব্যবস্থাপনায় যেন অগ্রগতি নয়, বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাবশালী পৃষ্ঠপোষকতা:
স্থানীয় সূত্রের দাবি, এলজিইডি কর্মকর্তা সফিউর রহমান বাচ্চু মুন্সির প্রভাবেই এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। জিএসআইডিপি (GSIDP) প্রকল্পের কাউলিবেড়া ইউনিয়নের অধীনে SDW-199 নং দরপত্রের আওতায় খাটরার পশ্চিম পাড়া এলাকার একটি নাল জমিকে কবরস্থান হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছে, যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে বাচ্চুর মাটি ভরাট বা প্রাচীর নির্মাণে কারো অনুমতি প্রয়োজন হয়নি।স্থানীয়রা জানায়, প্রকল্পের অর্থ দিয়ে বাচ্চু তার নিজের শ্বশুর বাড়িতে কিছু উন্নয়ন মূলক কাজ করে দিয়েছেন,তবে এবিষয়ে তথ্য উপাত্ত আরও যাচাই এর প্রয়োজন আছে।
ফয়সাল রাজু নামে একজন ভুক্তভোগী জানান, “বাচ্চু ও তার সহযোগীরা জিএসআইডিপি প্রকল্পের কাউলিবেড়া ইউনিয়নের অধীনে SDW-199 নং দরপত্রের আওতায় অর্থ ব্যবহার করে ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত আমাদের জমিতে মাটি ভরাট ও প্রাচীর নির্মাণ করেছেন।আমাদের জমির রেকর্ড আছে এবং খাজনা পরিশোধ করি।”তিনি আরও বলেন, “সরকারি কর্মকর্তারা প্রজেক্ট এর নামে অনুমতি ছাড়া যে কারো যে কোনো জমি দখল করে নিতে পারেন না, এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নির্বাহী পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ জানাবো।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আহমদ মিয়াকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য আহ্বান জানানো হলেও তিনি কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তিনি জানান, গ্রামের কোর কমিটির প্রধান সফিউর রহমান বাচ্চুর নির্দেশ ছাড়া তিনি কোনো পদক্ষেপ নিতে পাবেন না।আহমদ মিয়া জানিয়েছেন বাচ্চু তাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে কোন মূল্যে জমির দখল ধরে রাখতে।অভিযোগ প্রমাণিত হলে এটি গুরুতর এবং এটি একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কর্মকাণ্ড হিসেবে ধরা যেতে পারে ।কবরস্হানের নামে জমি দখল করে রাখলে এটা প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক যে, তারা কবরের নামে জমি দখল করে রাখতে চায় কেন? কি এমন গোপন বিষয় আছে যা প্রকাশ হয়ে পরার ভয়ে আছেন আহমদ – মাসুদ মিয়ারা?যারা অপরাধ করেন তারা ধরা পরার আগ পর্যন্ত মনে করেন তারা সঠিক কাজ বা সঠিক পথে আছেন,কিন্তু ধরা পরার পর প্রকাশ হয়ে যায় অনেক কিছু ।আমরা দেখেছি গ্রামবাসীর সন্দেহ ধীরে ধীরে ডাল পালা মেলতে শুরু করেছে ।
বাচ্চুর কোর কমিটিতে যুক্ত আছেন একজন আমেরিকা প্রবাসী নাম সেলিম মুন্সি ও স্থানীয় এক ব্যবসায়ী সহ আরও অনেকই যাদের বিরুদ্ধে অন্যের জমিতে মাটি ভরাট ও প্রাচীর নির্মাণে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে।বিগত সরকারের সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অনেকেই আমেরিকা-কানাডায় বসবাসের জন্য অনেকেই অনৈতিক কিছুই করেছেন এবং বেগম পাড়ায় সম্পত্তিও করেছেন, এসব সংবাদ মাধ্যমেই আমরা দেখেছি ।তাই বাচ্চু ও সেলিম গংদের সহযোগী আহমদ,মাসুদ ও ওমরদের কার্যকলাপ নিয়ে দূর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তের আবেদনে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে বলে ভূক্তোভূগি ফয়সাল রাজু মনে করেন।
খাটরা গ্রামের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ ব্যবহারে অনিয়ম, জবরদখল ও ব্যক্তিগত প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ সত্যিই গভীর উদ্বেগের কারণ। সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত না হলে সমাজে বিভাজন ও অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় প্রশাসন ও এলজিআরডি কর্তৃপক্ষকে দ্রুত তদন্তপূর্বক প্রকল্পের সকল নথিপত্র, দরপত্র প্রক্রিয়া, ঠিকাদার ও জমির মালিকানা যাচাই সহ জমি ভরাটের লিখিত অনুমতি
না থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন হবে।