নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা বলে ডাক্তার কিম্বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। কিন্তু কেউ বলে না রাজনীতিবিদ হতে চাই। কারণ আমাদের রাজনীতিবিদ সম্পর্কে একটা নেগেটিভ ধারনা আছে অনেকের। কিন্তু সবাই একরকম নয়।
রবিবার (১৩ মার্চ) মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের ভাষা সৈনিক মমতাজ বেগম মেধা বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন- ভাষা সৈনিক মমতাজ বেগমের নাতনী ডা. ফারজানা ইসলাম রূপা ও ডা. মনিরাসহ স্কুলের শিক্ষকমন্ডলী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সদস্য যুক্ত করার জন্য একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানান নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।
মেয়র আইভী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জায়গা প্রদান প্রসঙ্গে বলেন, মর্গ্যান স্কুলের জায়গা তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা দিয়েছে। মেয়েদের লেখাপড়ার প্রসার করতে মর্গ্যান সাহেব এই স্কুলটি করেছিলেন। কিন্তু তাকে স্কুল করতে জায়গা দান করেছিল নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা।
নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা কেবল মর্গ্যান নয় নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল, নারায়ণগঞ্জ কলেজ, তোলারাম কলেজসহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জায়গা দান করেছে। কিন্তু কালেভদ্রে এমন হয়েছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে তৎকালীন পৌরসভা বা বর্তমান সিটি করপোরেশনের কাউকেই রাখা হয়না।
আমার মনে হয়, কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সবগুলো স্কুলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সদস্য রাখা উচিত। যেমন পূর্বপুরুষকে সম্মান, কৃতজ্ঞতা না জানানো হলে দেশের ইতিহাস থাকেনা বেশিদিন।
শুধু এখানে নয় আমরা কয়েকবার নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলে জানিয়েছি, চিঠি পাঠিয়েছি। নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুলের পুরো জায়গা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন দান করেছে। আমাদের সদস্য নেন আমরা কথা বলি।
নাসিক সদস্য হাইস্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে রাখার জন্য চিঠি দিয়েছি। মসজিদ, মন্দিরে জায়গা দিয়েছি। কিন্তু এই কথাগুলো কেউ মনে রাখতে চায় না।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ সিটি করেপারেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ ভাষা সৈনিক মমতাজ বেগমের প্রসঙ্গে বলেন, মমতাজ বেহম একজন মহীয়সী ব্যক্তি ছিলেন। শত প্রতিকুলতার মাঝেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লড়াই করেছেন। নিজের সব কিছু ত্যাগ করে ভাষার জন্য লড়াই করেছেন।
তার দেশ প্রেম কতটা কঠিন আর প্রখর ছিল। এখন আমাদের হাতের মুঠোয় সব থাকলেও আমরা প্রতিবাদ করতে ভয় পাই। মর্গ্যান স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী তার ইতিহাস সম্পর্কে জানত না। কারণ তার ইতিহাস সংরক্ষিত ছিল না।
এক পোগ্রামে দাবি উঠেছিল ভাষা সৈনিক মমতাজ বেগমের নামে যেন একটি সড়কের নামকরণ করা হয়। পরবর্তীতে স্কুলের পাশের সড়কটি তার নাম করণ করা হয়। যেন তার ইতিহাস সম্পর্কে স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানতে পারে।