এলাকাবাসীর দানে নির্মিত বিদ্যানিকেতন হাইস্কুলকে পারিবারিক ট্রাষ্টি সম্পত্তিতে পরিণত করা কুচক্রী কাশেম হুমায়ুন ও এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজের প্রতিনিধি আব্দুস সালাম গংদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবীতে এবং স্কুলের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় সিনামন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে ভূঁইয়ারবাগ এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত এলাকাবাসী জানান, শহরের অনগ্রসর এলাকা দেওভোগ ভূঁইয়ারবাগ এলাকাবাসী সময়ের প্রয়োজনে বিগত ২০০৭ সালে মজা পুকুর ভরাট করে বিদ্যানিকেতন স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করে। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করার জন্য চার তলা ফাউন্ডেশন সহ ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে নাজির হোসেন অত্র ভবনটি নির্মান করে দেন। যেখানে এলাকাবাসী সাড়ে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা প্রদান করে। এছাড়াও অত্র এলাকার বাসিন্দা আহসান উল্লাহ দেড় লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করে। নাজির হোসেনের হাওলাদ প্রদানকৃত টাকা প্রায় ৭/৮ বছর পর ফেরত দেওয়া হয়। স্কুলের নার্সারী থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত যাবতীয় আসবাবপত্র নাজির হোসেন নিজস্ব অর্থায়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি করে দেন। অথচ যখন এই স্কুল তৈরি হয় তখন কাশেম হুমায়ুনের এতে কোন সমর্থন ছিলোনা বরং তিনি এর বিরোধিতা করেছিলেন।
তারা জানান, স্কুল পরিচালনার জন্য শিক্ষা বোর্ডের নিয়মানুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির প্রয়োজন হলে দেলোয়ার হোসেন চুন্নু সভাপতি ও এটিএন নিউজের আব্দুস সালাম সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ইচ্ছে পোষন করে। কিন্তু যার একক অর্থায়নে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলো তাকেই সহ-সভাপতি করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। কিন্তু এলাকাবাসী সেটা মেনে নেয় নি। তবে কয়েকজন চাটুকারের কারনে কাশেম হুমায়ুনকে সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। সে তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা বানিয়ে বন্ধু,-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ট্রাষ্টি গড়ে তোলে। যা আজ পর্যন্ত জনসমক্ষে ও প্রশাসনে ব্যবহার করছে। তিনি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এটা নির্ভেজাল মিথ্যে। তিনি অগ্রণী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার সুবাদে ঋণখেলাপী ও দূর্ণীতিবাজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে স্কুলের নামে অনুদান গ্রহন করে অপ্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করে তহবিল তছরুপ করেন। কত টাকা তিনি অনুদান নিয়েছেন সেটা তিনি প্রকাশ করেন নি।
তারা আরও জানান, বর্তমানে স্কুলের পড়ালেখার মান এতটাই খারাপ হয়েছে যে ২০২৫ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থীরা অর্ধেকই উত্তীর্ণ হতে পারবে না। শুরুতে বেতন ৫০ টাকা থাকলে বর্তমানে সেটা ৫৭০, পরিক্ষার ফি ৬০০, টিসি নিতে হলে ৩৫০০ টাকা। বাইরের এলাকার হলে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত নিতো। অনুপস্থিত হলে জোর পূর্বক ১০০ টাকা জরিমানা রাখা হতো। লজ্জাজনক বিষয় হচ্ছে ক্যান্টিনে নিম্ন মানের খাবার পরিবেশন করে বিক্রেতার কাছ থেকে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে। তার কাছে ছাত্ররা কোন যৌক্তিক দাবী নিয়ে গেলে তাদেরকে নেশাখোর, বাবাখোর বলে গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দিতো। এলাকাবাসী দির্ঘদিনের এ ক্ষোভ গত ২০ আগষ্ট প্রকাশ পায়। আব্দুস সালামকে অবাঞ্চিত, অপমানিত ও গণপিটুনি দিয়ে স্কুল থেকে বিতাড়িত করে এবং সকলের সামনে মোবাইল ফোনে কাশেম হুমায়ুন পদত্যাগের ঘোষনা দেন। গত ১৯ আগষ্ট রাত ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভয়ভীতি দেখায় যাতে কোন আন্দোলনে যোগদান না করে। বর্তমানে স্কুলের পড়লেখা ও ব্যবস্থাপনার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নাজির হোসেন সহ এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নাজির হোসেন, রুহুল আমীন, হারুন খান, হাজ্বী জহির আলী, নজরুল ইসলাম দেওয়ান, আব্দুল গণি সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।