আড়াইহাজারের রংমিস্ত্রী আব্দুল করিম (৫৮) কম মজুরিতে কাজে যেতে অনীহা প্রকাশ করায় সহকর্মী মো. মনির (৩০) তাকে খুন করে। গত ৫ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের ব্রাহ্মন্দীর ষাড়পাড়া এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।
খুনের অভিযোগে মো. মনিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডির সদর দপ্তরে পুলিশের এই তদন্ত সংস্থার অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার খায়রুল আমিন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
খায়রুল আমিন বলেন, ঘটনার দিন সকালে আব্দুল করিমের বাসায় আসেন সহকর্মী রংমিস্ত্রি মনির। তাদের একসঙ্গে কাজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মনির হোসেনের সঙ্গে কাজে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন করিম। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন দুজনে মারামারিতে লিপ্ত হন।
মনিরের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষিতে করিম গুরুতর আহত হন। এসময় করিমের চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয় তাকে।
পরীক্ষার টাকা সংগ্রহ করার জন্য করিমকে বাড়িতে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। বাড়িতে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই করিম মারা যান।
ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসা. নার্গিস (৪৮) স্বামীর সহকর্মী মনিরকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরবর্তীতে গত ১৮ জানুয়ারি রাতে অভিযান চালিয়ে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থেকে মনিরকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. মনির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রায় আট বছর ধরে করিম ঢাকা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় রংমিস্ত্রির কাজ করেন। তার সঙ্গে প্রায় চার বছর ধরে কাজের সুবাদে মনিরের পরিচয়। তিনি করিমের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
এদিকে, করিমের জন্য দৈনিক ৪০০ টাকা এবং সহকারী হিসেবে মো. মনির তার নিজের জন্য দৈনিক ৫০০ টাকা মজুরিতে নতুন একটি কাজ ঠিক করেন। কিন্তু করিম হেড মিস্ত্রি এবং তার যন্ত্রপাতি দিয়েই মূলত কাজ করা হয় তবুও তার দৈনিক মজুরি কম হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি মনিরের সঙ্গে কাজে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
তখন মনির উত্তেজিত হয়ে করিমকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে মাটিতে ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যান এবং আঘাতের কারণেই তার করিমের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় সিআইডি।