নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বিরুদ্ধে দায়ের করা আইসিটি আইনের মামলার চার্জ গঠন করছে আদালত। রবিবার (১৭অক্টোবর) সকালে ঢাকার সাইবার ট্রাইবুন্যাল আদালতের বিচারক আস সামস মোহাম্মদ জগলুল হোসেন চার্জ গঠন করেন। করোনাকালে লাশ দাফন করে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন কাউন্সিলর খোরশেদ।
এদিকে চার্জ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঐ মামলার বিচার শুরু হয়েছে। চার্জ গঠনের সময় আদালতে মামলা বাদী সাঈদা আক্তার ওরফে সায়েদা শিউলি ও এবং আসামী মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ অপর আসামী আরটিএন ফেরদৌসি আক্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মামলাটির চার্জ গঠনের পর আদালত থেকে বেরিয়ে আসার পর বাদী সাঈদা আক্তারকে মারধর করেছে আসামী পক্ষের লোকজন । এমন অভিযোগ এনে রাজধানী কোতয়ালী থানায় জিডি করেছেন সাঈদা আক্তার। জিডি নং ৯৬৫।
জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, আদালত আমার দায়ের করা আইসিটি মামলায় চার্জ গঠন করার কারনে আসামীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে। একপর্যায়ে আসামী খোরশেদ তার স্ত্রী লুনা এবং অপর ফেরদৌসি আক্তারসহ আরো কয়েকজন আদালত প্রাঙ্গনে আমাকে বেদম মারধর করে। আমি চিকিসা নিয়ে এসে কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করি।
গত ১৬ মে সাঈদা আক্তার ফতুল্লা থানায় খোরশেদ ও ফেরদৌসি আক্তারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং : ৩২। এ মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা । পরবর্তীতে রবিবার আদালত চার্জ গঠন করে মামলার বিচার কাজ শুরু করেছে।
মামলায় বাদী সাইদা আক্তার উল্লেখ করেন, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ সি, এনজি অনার্স এসোসিয়ানের সভাপতি এবং গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ও বিজেএমইর সদস্য। ফেসবুকে লাইভে এসে সাঈদা আক্তার ওরফে সায়েদা শিউলি বিরুদ্ধে আপত্তিকর, বানোয়াট ও মিথ্যা কাহিনী সাজিয়ে কুৎসা রটানোর অভিযোগে মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও ফেরদৗসি আক্তারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি।
বিবাদী অভিযোগে বলেন, খোরশেদের সাথে তার পরিচয় ছেলেবেলা থেকে। তার ইতিপূর্বে একটি বিবাহ হয়েছিলো। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়। সে ঘরে সন্তানও রয়েছে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে খোরশেদ এবং বাদী ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করতো। এক পর্যায়ে খোরশেদ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।
২০২০ আগস্ট মাসের ২ তারিখে কাচপুরস্থ এস. এস ফিলিং স্টেশনে কাউন্সিলর খোরশেদ নিজেই কাজী নিয়ে গিয়ে ৫ লাখ টাকা দেন মোহরে তাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর সে এবং খোরশেদ বিভিন্ন স্থানে একসাথে রাত্রি যাপনসহ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে খোরশেদ তার সাথে সম্পূর্ণ রুপে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এ অবস্থায় সে ব্যবসায়ীক কাজে দুবাই চলে গেলে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ২৪ তারিখে খোরশেদ তার ফেসবুক লাইভে এসে তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর, মানহানিমূলক তথ্য উপস্থাপন করে এবং নানা বাজে মন্তব্য করে কুৎসা রটায়। এর একদিন পর ২৫ তারিখে ফেরদৌস আক্তার রেহানা ওরফে রেহানা মুসকান নামক এক নারী খোরশেদ খন্দকারের বাসায় বসে লাইভে এসে তার সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে।
তাকে রাস্তার মেয়েদের সাথে তুলনা করে আপত্তিকর কথাবার্তা বলে এবং তার চুল কেটে ফেলা হবে বলেও ফেসবুক লাইভে বলেন। এই দুটো বিষয়ই দুবাই থাকাকালীন অবস্থায় তিনি তার এক বান্ধবীর নিকট থেকে জানতে পেরে পরবর্তীতে তাদের আইডি থেকে পুরোপুরি বিষয়টি দেখেছেন। এবং মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ রবি ববার রাতে জানান, এমন লাগাতার মিথ্যা হয়রানিতে আমি বিপর্যস্ত। এখন আর আমার পরিবারের সদস্যরাও নিরাপদ নয়। আমার মৃত্যুই এখন পারে আমার পরিবারকে নিরাপদ রাখতে।