বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, ১৯৭১ সালে যেভাবে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেভাবেই ৭৫ সালে তিনি ক্ষমতায় আসেন। কাউকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেননি।
জাতির প্রয়োজনে দেশের সিপাহী-জনতা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাকে ক্ষমতায় আনার পর তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন। জিয়াউর রহমান দেশে গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে এসেছিলেন। তখন গার্মেন্টস কাকে বলে এদেশের মানুষ চিনত না। আজ মানুষ এত এত রেমিটেন্স পাঠায়, এটাও শহীদ জিয়ার অবদান।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জম্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে আয়োজিত উন্মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য পোনা অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার (২১ জানুয়ারি ) সকাল ১১টায় শহরের হাজীগঞ্জ- নবীগঞ্জ গুদারাঘাটে শীতলক্ষ্যা নদীতে নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় বরকত উল্লাহ বুলু জিয়াউর রহমানকে ‘ক্ষণজন্মা পুরুষ’ উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, তার জন্ম না হলে স্বাধীনতার ঘোষণা হতো না। সেদিন তরুণ মেজর বিদ্রোহ ঘোষণা করে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে তিনি আবার সেনা বাহিনীতে ফিরে গেলেন।
যে বিষয়গুলোকে সামনে রেখে দেশ স্বাধীন হয়েছিল তারা দেশ স্বাধীনের পর বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তারা (আওয়ামী লীগ) বাকশাল কায়েম করে মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছিল। বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করেছিল। কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করায় ১৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। এদেশে অনেক নেতা মারা গিয়েছেন। কার জানাজায় কতজন লোক হয়েছে? শেখ হাসিনা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, “ভোর পর্যন্ত তারা বলেছিল বঙ্গবন্ধু যেখানে আমরা আছি সেখানে। কিন্তু আমার বাবার লাশ বত্রিশ ঘণ্টা ধানমণ্ডিতে পড়েছিল। কেউ উকি দিয়ে আমার বাবার লাশ দেখতে যায়নি। রিলিফের কাপড় দিয়ে আমার বাবার দাফন হয়েছে। ” কেন আসেনি তা ইতিহাসের মূল্যায়ন।
আমরা গণতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করি। আমরা চাই সুস্থ সুন্দর আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে দেশের হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে আবারও ক্ষমতায় আসবেন সেই আশা আর বাস্তবায়ন হবে না। আমরা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করি আর সেই কারণেই নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ন সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জননেতা তারেক রহমান বলেছেন এই সরকারের অধীনে বিএনপি আর নির্বাচনে যাবে না। সেজন্য তিনি রাষ্ট্রকে মেরামত করতেই ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। ১০দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমেই এ দেশে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরি হবে।
এ সময় বরকত উল্লাহ বুলু আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জম্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই মাছের পোনাগুলো বাঁচবে কিনা আল্লাহই জানে। কারণ নদীর পানি খুবই দূষিত। অথচ এ বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনের কোনো নজর নেই। তাই আজকে আমরা দাবি জানাবো এই নদীতে মাছ যেনো আগের মতো বাঁচতে পারে। এবং শীতলক্ষ্যার নদীর পানি দূষণমুক্ত ও পরিবেশ যাতে সুন্দর থাকে।
তিনি বলেন, আমরা গত বছরে ২২ আগস্ট থেকে সারাদেশে কর্মসূচি শুরু করেছি। এই কর্মসূচি পালন করতে কি আমাদের ১৫ জন নেতা কর্মীকে পুলিশ সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা তো কোথাও কোন অরাজকতা বা গন্ডগোল করিনি। আমাদের সাতটি বিভাগে গণসমাবেশ করেছি।
গত ৭ ডিসেম্বর আমাদের পার্টি অফিসে নির্বিচারে গুলি করে আমাদের শত শত নেতাকর্মীদেরকে আহত করেছে। ৫ শত নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মকবুল নামের আমাদের এক নেতা সেইদিন শহীদ হয়েছিল। এগুলো কারা করছে। আমরা যেদিনই কোন কর্মসূচি দেই সেদিনই তারা রাস্তায় নেমে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ সেলিম মিঞার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুর রহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. মজিবুর রহমান, মাসুদ রানা, সদস্য ও জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক এড. এইচ এম আনোয়ার প্রধান, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, মহানগর মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম রতন, সদস্য সচিব সাগর প্রধান, জেলা মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. শেখ আঞ্জুম আহম্মেদ রিফাত, মহানগর মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু, ফতুল্লা থানা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি রাসেল প্রধান, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক নাঈম খানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।