সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের সহায়তায় দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন আনন্দ উৎসবের আয়োজনকে আমাদের সমাজের ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল শনিবার বিকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা পরিদর্শন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াই উৎসব করা যায়, সে জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, সবাই মিলে এবার আমরা অত্যন্ত গৌরবপূর্ণ দুর্গাপূজা করতে পেরেছি। এর জন্য তিনি সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা সবাইকে ধন্যবাদ জানান। বেলা ৩টায় পূজামণ্ডবে পৌঁছলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতারা প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ জানান, প্রধান উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এলাকায় নি-িদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নিজেদের মনে করিয়ে দিই, সেনাবাহিনীকে দিয়ে, পুলিশকে দিয়ে, র্যাবকে দিয়ে আমাদের আনন্দ উৎসব করার আয়োজন করতে যাওয়াটা আমাদের ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতাকে আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা এ রকম সমাজ চাই না। ড. ইউনূস বলেন, সমাজের যেকোনো অংশ উৎসব করবে, আমরা সবাই মিলে সেখানে শরিক হব, তারা যেন নির্বিঘ্নে, আনন্দসহকারে উৎসব করতে পারে, তারা নিজেরা এই আনন্দে অংশ নেবে এটিই তো হওয়ার কথা। তিনি বলেন, এই যে আমরা আপনাদের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে আপনাদের উৎসবের সুযোগ করে দিলাম। এটি যেন ভবিষ্যতে আর কখনো করতে না হয়, সে জন্য আমরা একযোগে কাজ করব।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এবার দুর্গাপূজার আনন্দ বিশেষ আনন্দে পরিণত হয়েছে, দেশজুড়ে যেটি সবাই উপভোগ করছে। এ আনন্দ আরেকটু বেড়ে গেলে এ জন্য একদম নির্বিঘ্নে সব জায়গায় পূজার অনুষ্ঠান হচ্ছে। সবাই চেষ্টা করেছে, কোনোরকম দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, কোনোরকম আতঙ্কজনক পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয়। এ জন্য সরকার এবং সরকারের বাইরে সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। এটি কঠিন কাজ, সহজ কাজ না। কঠিন কাজ অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করতে পেরেছে। এই কঠিন কাজটি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সমাধা করতে পেরেছে। সবাই মিলে কাজ করলে যে সফলতা পাওয়া যায়, সেটি তারা প্রমাণ করেছে। তারা কষ্ট করার কারণে আমরা ছুটি উপভোগ করতে পারছি। তাদের ধন্যবাদ জানাই। ড. ইউনূস বলেন, আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে চাই, যে বাংলাদেশে যারা এই দেশের নাগরিক তাদের সবার সমান অধিকার, এটি আমরা নিশ্চিত করছি।