পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রাইভেটকার উল্টে নিহত হন পাঁচ বন্ধু। এদের মধ্যে চারজনের বাড়ি উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামে। নিহত এ চার বন্ধুর একসঙ্গে জানাজা ও একই কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহত আরেক বন্ধুর জানাজা হয়েছে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী গ্রামে। এর আগে স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই শুক্রবার (৫ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পাকশী হাইওয়ে পুলিশ।
একে একে আজমপুর গ্রামে প্রবেশ করে জিহাদ হোসেন (১৭), রিয়াদুল ইসলাম শিশির (১৮), সিফাত হোসেন (১৮) ও বিজয় হোসেনের (১৯) মরদেহ বহনকারী গাড়ি। এসময় নিহতদের বাড়িতে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে এলাকা। একসঙ্গে গ্রামের চার তরুণের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তারা।
জুমার নামাজের পর দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে আজমপুর মসজিদের সামনে নিহত চার বন্ধুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন কালিকাপুর মাদরাসার সুপার সাদিকুল আমিন। দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় আজমপুর-ডিগ্রিপাড়া গোরস্থানে। পরে চার বন্ধুকে কবরস্থানে পাশাপাশি দাফন করা হয়।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদার, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বকুল সরদারসহ ঈশ্বরদী উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।
অন্যদিকে নিহত আরেক বন্ধু শাওনের জানাজা শেষে দাফন করা হয় তার নিজ গ্রাম ভাড়ইমারী কবরস্থানে।
এর আগে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে আজমপুর গ্রামে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ। এসময় তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে সরকারিভাবে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে। তাদের যে কোনো প্রয়োজনে আমরা পাশে আছি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) রাত ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের পাবনা সুগার মিলের সামনে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারে থাকা পাঁচ বন্ধু নিহত ও দুজন গুরুতর আহত হন।
নিহতরা হলেন ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে জিহাদ হোসেন (১৭), ইলিয়াস হোসেনের ছেলে রিয়াদুল ইসলাম শিশির (১৮), মৃত মাসুম হোসেনের ছেলে সিফাত হোসেন (১৮), আনোয়ার হোসেনের ছেলে বিজয় হোসেন (১৯) ও ভাড়ইমারী গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে শাওন (১৮)।
দাশুড়িয়ার ভাড়ইমারী গ্রাম থেকে শাওন হোসেনের প্রাইভেটকার নিয়ে আজমপুর গ্রামের দিকে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে চালক বিজয় হোসেন ছাড়া বাকি চারজনই ঈশ্বরদী টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ছাত্র।