রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ইরানকে কোন পথে নেবেন সংস্কারপন্থি পেজেশকিয়ান?

  • আপডেট সময় রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪, ৯.২৬ এএম
  • ৪৩ বার পড়া হয়েছে

গত মে মাসে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত ইব্রাহিম রাইসির স্থলাভিষিক্ত হিসেবে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্কারপন্থি মাসুদ পেজেশকিয়ানকে বেছে নিয়েছেন ইরানিরা। ৬৯ বছর বয়সী পেজেশকিয়ান পেশায় হৃদরোগবিষয়ক শল্যবিদ। দেশটির অতিরক্ষণশীল সাঈদ জালিলির বিরুদ্ধে রানঅফ নির্বাচনে সর্বোচ্চসংখ্যক ভোট পেয়েছেন তিনি। শুক্রবারের নির্বাচনে পড়া মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ ভোটের প্রায় এক কোটি ৬০ লাখই পেয়েছেন ইরানের সংস্কারপন্থি আইনপ্রণেতা পেজেশকিয়ান। যা ভোটের হারে প্রায় ৫৪ শতাংশ।

তিনি দেশটির প্রধান সংস্কারপন্থি জোট ও অনেক ইরানির সমর্থন পেয়েছেন। যারা আবারও ইরানের ক্ষমতায় কট্টরপন্থীদের নিয়ন্ত্রণের আশঙ্কা করেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় পেজেশকিয়ান ‌‌‘‘ইরানকে বিচ্ছিন্নতা থেকে মুক্ত’’ করে পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে তেহরানের ‘‘গঠনমূলক সম্পর্ক’’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পরাশক্তির সাথে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। ইরানের পারমাণবিক কার্যকলাপ সীমিত করতে দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ছিল সেই চুক্তিতে। কিন্তু ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেটি ভেস্তে যায়।

২০২২ সালে হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মাহসা আমিনি নামের এক তরুণী। পরে পুলিশি জিম্মায় নির্যাতনে ওই তরুণীর মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে হিজাববিরোধী আইন শিথিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরার বিধান কার্যকর করার জন্য পুলিশি টহলের ‘‘পুরোপুরি’’ বিরোধিতা করেছেন পেজেশকিয়ান। একই সঙ্গে ইরানে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটের ওপর যে কড়াকড়ি আরোপ রয়েছে তা শিথিল করারও অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

পেজেশকিয়ান তার সরকারে আরও বেশি নারী ও জাতিগত সংখ্যালঘু যেমন— কুর্দি এবং বেলুচদের অন্তর্ভুক্ত করার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি মুদ্রাস্ফীতি কমানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন; যা দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশে অবস্থান করছে। গত কয়েক বছরে মুদ্রাস্ফীতি দেশের মানুষের পিঠ দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

অতিরক্ষণশীল সাঈদ জালিলির সাথে এক বিতর্কে পেজেশকিয়ান বলেছিলেন, ইরানের ২০০ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিশ্বজুড়ে ইরানের সম্পর্কে সংশোধন আনার মাধ্যমেই এই বিনিয়োগ পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

অন্যান্য অনেক দেশের মতো ইরানের প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী নন এবং চূড়ান্ত কর্তৃত্ব দেশটির সর্বোচ্চ নেতার হাতে। আর সর্বোচ্চ নেতার পদে প্রায় ৩৫ বছর ধরে আছেন আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেজেশকিয়ান দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদাধিকারী হবেন। দেশের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতিতে তার প্রভাব থাকবে। অর্থনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে নীতি নির্ধারণ তার ক্ষমতার আওতায় থাকবে।

তবে দেশটির পুলিশের ওপর তার সীমিত নিয়ন্ত্রণ থাকলেও সেনাবাহিনী ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ওপর তার কোনও কর্তৃত্ব থাকবে না। কারণ দেশটির পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং আইআরজিসি সরাসরি সর্বোচ্চ নেতার কাছে জবাবদিহি করে। খামেনির নির্ধারিত রাষ্ট্রীয় নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পাবেন পেজেশকিয়ান।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort