আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানককে উদ্দেশ করে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, আমি জীবনে এমন বহু ঘুঘু দেখেছি, আল্লাহ আমাকে বহু ঘুঘু দেখাইছে। বাকিটা আল্লাহ জানে কী হবে। আমি মিছিলের মধ্যে গুলি খেয়ে মরিনি। আল্লাহ আমাকে মারেনি, আমার সঙ্গের লোকটা ইব্রাহিম মারা গেছে। তখন যেহেতু আল্লাহ রহমত করেছে বাকি সময়টাও আল্লাহ রহমত করবে।
সোমবার সকালে বন্দর সিটি করপোরেশন এলাকার ২৭নং ওয়ার্ডে প্রচারণা ও গণসংযোগকালে স্বতন্ত্র (হাতি মার্কা) মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার এসব কথা বলেন।
তিনি এসময় বলেন, নারায়ণগঞ্জে কে গডফাদার কে গডফাদার না, কে গডমাদার কে গডমাদার না, কে কেন উইনেবল ক্যান্ডিডেট কে উইনেবল না- সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, নির্বাচনে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন যেন ঘটে সেভাবে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশকে নির্দেশ দেন। আমাদের নেতাকর্মী ও আমার পক্ষে যারা কাজ করছেন তাদের হয়রানি করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, একটা প্রবাদ আছে মসজিদ ভাঙলে গড়া যায় কিন্তু মন ভাঙলে গড়া যায় না। পুলিশ দিয়ে জোর করো নির্বাচন করলে এটা সরকার প্রধানের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একটা মেয়র নির্বাচনের জন্য একটা সরকার যদি নগ্নভাবে পুলিশকে ব্যবহার করে, ভয়ভীতি দেখায়- তাহলে সরকার প্রধানের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এ নির্বাচনটা নারায়ণগঞ্জের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত। জনগণ যেটা চায় সেটাই হবে।
নিজের সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে তৈমুর বলেন, নির্বাচন খুব উৎসবমুখর পরিবেশেই হচ্ছিল। কিন্তু আমার সমর্থক ও যারা নৌকার পক্ষে নামেনি তাদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ যাচ্ছে। নৌকার পক্ষে ভোট করার কথা বলছে। এভাবে সরকারি হস্তক্ষেপ হচ্ছে। আমি চাই নির্বাচনে যেন জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটে। এটা না হলে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত হবেন স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। মানুষ বলবে তিনি নিজের প্রার্থীকে জেতাতে বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি প্রশাসনের কাছে সব বলেছি। তারা নির্ধারিত মাপের বাইরে বড় বড় বিলবোর্ড তৈরি করেছে, পাইকপাড়ায় নয়টা ক্যাম্প করেছে। বেশ কয়েকটা জায়গায় গেইট করে নৌকা স্থাপন করেছে। আমি ডিসি এসপিকে জানিয়েছি, তারা বলেছে এগুলো ভেঙে দেবেন, কিন্তু এখনো ভাঙেননি।
তৈমুর বলেন, প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকলেই চলে, ব্যক্তি যেই হোক। তাদের নিরপেক্ষ থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জ একটি রাজনৈতিক সূতিকাগার। এ নারায়ণগঞ্জে স্বাধীনতার পর থেকে সরকারি দল সমর্থিত কোনো প্রার্থী জয়লাভ করেনি। ২০১১ সালে আমি বসে যাওয়ার পর আইভী জিতেছিলেন। তিনি কিন্তু বিদ্রোহী হিসেবে জিতেছেন। বিএনপির সময় আমরা যে ক্যান্ডিডেট দিয়েছিলাম তিনিও হেরেছেন। চুনকা ভাইয়ের সঙ্গে যখন নাজিমুদ্দিন মাহমুদ পাশ করেন তখন চুনকা ভাই সরকারি সমর্থন পেয়েছিলেন। সরকারি সমর্থনটা নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য ফ্যাক্ট না।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জবাসী দেখবেন কর্ম। তারা দেখবেন একটা প্রার্থীর জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা। আজকে আঠারো বছরের যে ব্যর্থতা এবং ঠিকাদার সিন্ডিকেট। হোল্ডিং ট্যাক্সসহ সকল ট্যাক্স বৃদ্ধি, মানুষ সেবা পাচ্ছে না। জলাবদ্ধতা যানজটসহ সবকিছু মিলিয়ে জনগণ আমাকেই ভোট দেবে।
তিনি আরও বলেন, মেয়র আইভীর বক্তব্যে পরিষ্কার, আমার দলে কোনো বিভাজন নেই। তার দলে বিশাল বিভাজন রয়েছে। শামীম ওসমানকে নিয়ে কথা ওঠে, তার বাপ-দাদা এমপি ছিলেন। তারা যে আইভীর পক্ষে না এটা আমরা বলি না, এটা আইভী নিজেই বলেছেন।