নারয়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, দখলদারিত্বের রাজনীতি আমি করি না। উত্তরসূরির রাজনীতি আমি করি না। আমার বাবা ছিল মুক্তিযোদ্ধা। তাকে বানাতে চায় রাজাকার। নারায়ণগঞ্জ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে।
এতো অত্যাচার, অন্যায়, মিথ্যা সহ্য করব না। কারণ আমি অন্য কোন জায়গা থেকে আসি নাই। আমি সিটি করপোরেশনের সকল জায়গায় সমান ভাবে উন্নয়ন করব। উন্নয়নে বাঁধা দিলে রূখে দাড়াবো। আমাকে কেউ ডিস্টার্ব না করলে আমি এমনিতেই কাউকে ডিস্টার্ব করি না।
আমাকে অনেক সময় প্রতিবাদ করতে হয়, সত্য কথা বলতে হয় বিবেকের তাড়নায়। কিন্তু আমি এই সিদ্ধিরগঞ্জে এসে ইপিজেড দখল করি। চাঁদাবাজি করার অভ্যাস নাই, সন্ত্রাসীও করিনা। মানুষের সেবা করা, কল্যাণ করাই আমাদের কাজ। এখানে অনেক মানুষ আছেন।
অনুরোধ করছি, প্রসিদ্ধ রাজাকারকে কারো কথায় মুক্তি যোদ্ধা বানানোর চেষ্টা করবেন না। এমন হলে আপনাদের মানুষ ধিক্কার দিবে।
শনিবার (২ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলের শান্তিনগর ক্যানেলপাড় এলাকায় এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, অনেকদিন পরে ভালো লাগল কারণ, আগে মনে হয়তো আমি অন্য কোন দল করি। একজনই যেন আওয়ামীলীগের সম্পত্তি আর সম্পদ। আমরা যেন ভেসে এসেছি। না আমরা ভেসে আসি নাই।
আপনারা অনেকেই আলী আহাম্মদ চুনকার কথা বলেছিলেন।
আলী আহম্মদ চুনকা মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিল। আমরা অনেকেই পুরোনো নেতৃত্বকে ভুলতে বসেছি। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকার, রাজাকারকে মুক্তিযোদ্ধা বানাই।
ইতিহাসকে আমরা বিকৃত করছি। ১৯৭৫ সালের পর যারা দলকে ধরে রেখেছে তাদেরকে আমরা অবমূল্যায়ন করি। তাদের কথা আমরা সাহস করে বলি না। আমাদের জুজুর ভয় কোথায়? একটি জায়গায়। যারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল করেন, এসব থেকে বেড়িয়ে আসেন।
জনগণের সাথে মিশে কথা বলেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা কোন্দলে কোন্দলে জর্জরিত হচ্ছি। দলে উপদলে জর্জরিত হচ্ছি। একজনকে আরেকজনের পিছে লাগিয়ে রাখছি।
মেয়র আইভী বলেন, আমি এতো বছরের রাজনীতিতে কখনোই একজনের পিছনে আরেকজনকে দাড়ায় করায় দেইনি। আরেকজন নেতা তৈরি করার চেষ্টা করিনি। নেতৃত্ব করতে হলে দলের থেকে বেড়িয়ে আসবে। কিন্তু একই দলের মধ্যে একাধিক প্রার্থী ঘোষণা করে নিজেদের মধ্যে বিবেধ তৈরি করিনি।
এগুলো কারা করে, আপনারা জানেন। সিদ্ধিরগঞ্জে ভয়ে কেউ কথা বলেন না৷ আমরা কাউন্সিলরা আমার সাথে মন খুলে কথা বলতে পারে না। কাউন্সিলরা কোথাও আসবে সেখানেও তাদের ভয়। এই ভয়ভীতিকে ঝেড়ে ফেলে দেন৷ নির্ভর করেন জনগনের উপর। নেতৃত্ব দেওয়ার মালিক আল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন কাকা খেলার মাঠের অভাবের কথা বললেন। সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি খাস জায়গার অনেক অভাব রয়েছে, তাই খেলার মাঠ বানাতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে বেশি করে খেলার মাঠ তৈরী করার। সেজন্য আপনাদেরও সহযোগিতা চাই।
নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লার সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কাদির, যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া, মহানগর যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুল হুদা বাবু, মুক্তিযোদ্ধা এহসান কবির রমজান, ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন, ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর উদ্দীন মিয়া, ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিএম সাদরিল,৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান খাঁন রিপন, ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন, ১,২,৩ নং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মাকসুদা মোজাফফর, ৪,৫,৬নং ওর্য়াডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক হোসেন চাঁনু ও আমজাদ হোসেন প্রমুখ।