শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জাতীয় সমাজসেবা দিবস ওয়াকাথন ও মুক্ত আড্ডা মায়ের মৃত্যু বার্ষিকী স্বরণে সমস্ত কবরবাসীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল বেপরোয়া যুবলীগ নেতা কাজী জহির করছেন জমি দখলের চেষ্টা নাসিক ৮ নং ওয়ার্ডে তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণে সাদরিল মদিনার সনদ কে মডেল বানিয়ে নতুন বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় ঢেলে সাজাতে হবে: অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ নারায়ণগঞ্জে কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত আটকে আছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক উন্নয়নের কাজ, ভোগান্তি ঝুলছিল গৃহবধূর লাশ, পরিবারের দাবি হত্যা নারায়ণগঞ্জে ১০ টাকায় মিলছে ফুলকপি! বন্দরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মহানগর বিএনপির আলোচনা সভা ও শীতবস্ত্র বিতরণ

অস্থির ডলারের দর, বাজারমুখী করার উদ্যোগ

  • আপডেট সময় বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫, ৩.৩৬ এএম
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

ছয় কারণে দেশে ডলারের বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বাজারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আজ থেকে শুরু হওয়া নতুন বছরের প্রথম মাস থেকে ডলারের বাজার স্থিতিশীল হবে বলেও মনে করেন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা। ডলার দাম নিয়ে দেওয়া ব্যাখ্যায় এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে নতুন বছরের শুরু থেকে ডলারের দাম আরও বাজারমুখী করার উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিন দুপুরের মধ্যে ডলার কেনাবেচার তথ্য সংগ্রহ করবে। এরপর ডলারের মধ্যবর্তী দাম প্রকাশ করা হবে। ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে কেনাবেচা করলে জরিমানা আরোপ করার পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশে ব্যাংক। জরিমানার পরিমাণ ১০ লাখ টাকা থেকে লেনদেনের ৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করলে তার জন্য নিলাম করবে। আগে শুধু পছন্দের ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করত।

বাজার উদাহরণ তুলে ধরে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন, ডলারের জন্য এক দিনেই কোনো কোনো ব্যাংক কারও কাছে ১২০ টাকা, আবার কারও কাছে ১২৭ টাকায় বিক্রি করেছে। এভাবে বাজার চলতে পারে না। একই সঙ্গে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয় কেনাতেও ডলারের দাম এক হতে হবে। ডলার সংগ্রহে মধ্যস্বত্বভোগীর সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। ডলারের দাম তদারকিতে নতুন বছরে ব্যাংকগুলো থেকে প্রতিদিন ডলার লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের মধ্যে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী শীর্ষ ২৫ ব্যাংকের সঙ্গে সভা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব পরিকল্পনার কথা জানানো হয়, যা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি হবে। সভায় উপস্থিত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ কিছু ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান যোগ দেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় গভর্নর জানিয়ে দেন, যারা ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। প্রবাসী ও রপ্তানি আয়ের ডলার একই দামে কিনতে হবে। ১১৯ টাকার সঙ্গে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ যুক্ত হতে পারে। কেনা দামের চেয়ে ১ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করা যাবে।

সভায় গভর্নর জানিয়ে দেন, যারা ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। প্রবাসী ও রপ্তানি আয়ের ডলার একই দামে কিনতে হবে। ১১৯ টাকার সঙ্গে আড়াই শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ যুক্ত হতে পারে। কেনা দামের চেয়ে ১ টাকা বেশি দামে একটি বেসরকারি ব্যাংকের একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জানান, এখন থেকে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বিনিময় হার নির্ধারণ করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘দুই ধরনের ডলার প্রবাহের জন্য অভিন্ন হার প্রয়োগ করতে হবে।
এর পাশাপাশি গভর্নর ডলার ক্রয়-বিক্রয়ে সর্বাধিক ১ টাকার ব্যবধান রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। আরেক এমডি বলেন, নতুন রেফারেন্স রেটের আশপাশে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ডলার লেনদেনের অনুমতি পাবে ব্যাংকগুলো। ডলার বিক্রি করা যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর বছর সমাপনী মাস। এ কারণে নানা ধরনের ঋণ পরিশোধের ভ্যালু ডেট এ মাসে পড়ে যায়। ফলে পেমেন্ট শিডিউলে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে ডলারের চাহিদা বাড়ে। তাই ডলারের দাম বেড়ে যায়।

ডলারের বাজার অস্থির হওয়ার অন্যতম কারণ সরকারের এ মুদ্রা বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) টার্গেট পূরণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। ফলে আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলারের যোগান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারছে না। বাংলাদেশের রেটিং অবনমনেও ডলারের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। ফলে বেড়ে গেছে ডলারের দাম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে, রেটিং অবনমনে ফরেন ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের করেসপন্ডেন্ট রিলেশনশিপ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ইউ-পাস এলসি খোলা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে, পেমেন্টের ম্যাচুরিটি ডেফার্ড করা সম্ভব হয়নি এবং অফশোর ব্যাংকিং ঋণের আন্তঃপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
ডলারের বাজার অস্থিরতার চতুর্থ কারণে হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈদেশিক দেনা পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার। এতে ডলারের চাহিদা বেড়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বৈদেশিক দেনা পরিশোধ সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার বাজারে চাপ বাড়িয়েছে। এছাড়া রেমিট্যান্স আহরণে অ্যাগ্রিগেটরদের একচেটিয়া ও মধ্যস্বত্বভোগী ভূমিকা বাজারে বিনিময় হারকে অস্থিতিশীল করা ও বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের ডলার ইনফ্লো-আউটফ্লোয় অসঙ্গতির কারণে এ বাজারে অস্থিতিশীলতা পরিলক্ষিত হয়েছে।

ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্যোগও নিয়েছে। তার অন্যতম হলো ইতোমধ্যে রেমিট্যান্স আহরণের বিনিময় হার সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা প্রতি ডলার (ক্রস কারেন্সি হলে তা ক্রস ক্যালকুলেশন করে ১২৩ দশমিক ০০ প্রতি ডলারের ঊর্ধ্বে হবে না) নির্ধারণ করেছে। পাশাপাশি ড্যাশবোর্ড/ডাটা মনিটরিং ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ফলে নতুন বছরের নতুন মাসের শুরুতে ডলার বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তবে ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ বলেছেন, সরকার পরিবর্তনের পর ডলারের বাজার অনেকটা স্থিতিশীল হয়ে এসেছে। অতিরিক্ত আমদানি দায় পরিশোধের চাহিদা আসায় মাঝে এক সপ্তাহে দাম ১২৬-১২৭ টাকায় উঠেছিল। তবে দাম আবার আগের জায়গায় ফিরে এসেছে। বাজার চাহিদা ও জোগানের ওপর নির্ভর করে। এভাবে চলতে দিলে দাম সহনীয় হয়ে আসবে। এতে কেউ ডলার মজুত করে বেশি মুনাফা করার সুযোগ পাবে না।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort