শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

যতটুকু পারি দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে যাব

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২২, ৬.৫৮ এএম
  • ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আবারও বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ যতটুকু পারি জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেশের দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে যাব। দেশবাসীকেও আমি সে আহ্বানই জানাই আজকের যে অগ্রগতিটা হয়েছে সেটা ধরে রেখে আমরা যেন আরও এগিয়ে যেতে পারি সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে।

সোমবার বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত ‘মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) শহিদ মনিরুল আলম মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে ২৯০ দিন বন্দি থাকার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পবিত্র মাটিতে ফিরে আসেন। এরপর থেকে জাতি প্রতি বছর দিনটিকে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। এ উপলক্ষ্যে সোমবার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়ে জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে একেবারে তৃণমূলের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন, তাদের ক্ষমতায়ন করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে জাতির পিতা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করাই আমাদের লক্ষ্য। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তোলা। মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই যে, তারা আমাকে বারবার নির্বাচিত করে দেশসেবার সুযোগ দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যখনই জাতির পিতা সাধারণ মানুষ তথা তৃণমূলের মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য পদক্ষেপ নিলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পদক্ষেপ নিলেন তখনই কিন্তু ১৫ আগস্টের আঘাতটা এলো। এই আঘাতটা শুধু একজন রাষ্ট্রপতিকে হত্যা নয়। এই আঘাত ছিল একটি স্বাধীন দেশের আদর্শ ও চেতনাকে হত্যা করা। কেননা ১৫ আগস্টের পর থেকে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা সেভাবেই রাষ্ট্রটা চালিয়েছিল। ১৫ আগস্টের খুনিরা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী তারাই ক্ষমতায় বসেছিল। আর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কোনো চেষ্টাই তারা করেনি। কাজেই যে মানুষগুলোর জন্য তিনি (জাতির পিতা) নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন, আজীবন জেল, জুলুম, অত্যাচার সহ্য করেছেন সেই মানুষগুলোর ভাগ্য গড়াটাই আমাদের লক্ষ্য।

শেখ হাসিনা ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করায় দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, তারা (দেশের জনগণ) আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। বার বার আমি ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সব থেকে বড় কথা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে ফিরে আসার স্মরণে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি পালন করতে পারছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই, যে আদর্শের জন্য তিনি দেশ স্বাধীন করেছিলেন, যে লক্ষ্যে তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছিলেন, জেল-জুলুম-অত্যাচার বারবার সহ্য করেছেন, নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন যে মানুষগুলোর জন্য সেই মানুষগুলোর ভাগ্য গড়া আমাদের লক্ষ্য।

জনগণের প্রতি ভালোবাসার কারণেই বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরেই সোজা জনগণের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও কথা না ভেবে তিনি চলে গেছেন সোজা তার প্রিয় জনগণের কাছে। যে জনগণের জন্য তিনি তার জীবনটা উৎসর্গ করেছেন। দেশে ফিরেই জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এ ভাষণটা ছিল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা। এ ভাষণটা ছিল স্বাধীন রাষ্ট্র কাঠামো কী রকম হবে, স্বাধীন রাষ্ট্র কীভাবে কোনো আদর্শে চলবে সেই আদর্শই তিনি এ ভাষণে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কখনো মৃত্যুকে ভয় পেতেন না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে এটাও বলেছিলেন যখন তাকে ফাঁসি দেওয়ার নির্দেশ হয়, তখন তিনি শুধু একটি দাবি করেছিলেন যে, আমাকে তোমরা মেরে ফেলতে পারো। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দিন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার লেখা দুটি কবিতা ‘বাবা’ ও ‘রেনু আমার মা’ আবৃত্তি করেন প্রখ্যাত আবৃত্তিকার সাবেক সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এর আগে ছোট ছেলেমেয়েদের অংশগ্রহণে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপরই এতে মুজিববর্ষের থিম সং- ‘তুমি বাংলার ধ্রুবতারা, হৃদয়ের বাতিঘর’ সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জাতির পিতার স্বদেশে ফিরে আসার ওপর একটি ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে এই মহান নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছোট বোন ও জাতির পিতার ছোট মেয়ে শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকালে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রাখা তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসাবে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে তিনি মোনাজাতে অংশ নেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort