শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৪ পূর্বাহ্ন

মুন্সীগঞ্জে বিএনপিকর্মী গুলিবিদ্ধ: দুই এমপিসহ ১৪২ জনের নামে মামলা

  • আপডেট সময় শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪, ১০.৪১ এএম
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

মুন্সীগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএনপির এক কর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ-১ ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ ১৪২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে ঢাকা পোস্টকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) খলিলুর রহমান বলেন, মামলাটি আজ শুক্রবার এফআইআর করা হয়েছে। তবে এই মামলায় এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর আহত মঞ্জিল মোল্লা (৫৩) বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। বাদী মঞ্জিল মোল্লা মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার ইব্রাহীম মোল্লার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর ও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় তিনটি হত্যা, দুটি হত্যাচেষ্টাসহ মোট পাঁচটি মামলা হলো।

নতুন এই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ ও তার ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আনিসুর রহমান ওরফে রিয়াদ, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান, মুন্সীগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মতিন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভূঁইয়া, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান, পঞ্চসার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, রামপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাচ্চু শেখ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সুরুজ, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন, সোনারং টংগিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন লিটন মাঝি , টঙ্গিবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কাজি আব্দুল ওয়াহিদ, টংগিবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাহিদ খান, গজারিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ পাভেল প্রমুখ।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুন্সীগঞ্জ সুপার মার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উত্তর ইসলামপুরের বিএনপির নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। ওইদিন সকাল পৌনে ১০টার দিকে ছাত্র-জনতা শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় জড়ো হলে মিরকাদিম পৌরসভার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক মেয়র শহিদুল ইসলাম শাহিনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য অস্ত্র-ককটেল নিয়ে শহরে প্রবেশ করেন। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ২-৩ হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পেটাতে শুরু করেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শহরের হাটলক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার সড়ক দিয়ে সুপারমার্কেট এলাকায় আসতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাগরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ছররা গুলি ছুড়ে পুলিশ। গুলিতে উত্তর ইসলামপুরের রিয়াজুল ফরাজী, সজল মোল্লা ও নুর মোহাম্মদ মারা যান। এতে দেড় শতাধিক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। ওই দিন এই মামলার বাদী মঞ্জিল মোল্লার পেটে, পিঠে ও হাতে তিনটি গুলি লাগে। ঘটনার পর থেকে আড়াই মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মঞ্জিল। এখনো তার চিকিৎসা চলছে। তার খাদ্যনালি ঝাঁজরা হয়ে গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক পায়খানার রাস্তা। বর্তমানে তার দিন কাটছে নিদারুণ কষ্টে। একদিকে ১০ সদস্যের পরিবার নিয়ে হিমশিম, অন্যদিকে পরবর্তী চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। দুই দফা অপারেশনে প্রাণ বাঁচলেও অর্থ সংকটে বন্ধ পরবর্তী চিকিৎসা। পূর্ণাঙ্গ ব্যয় বহন ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort