শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন

ভিক্টোরিয়ায় যে কারণে মিলছে না কাংখিত সেবা

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২২, ৪.৩০ এএম
  • ২২৪ বার পড়া হয়েছে

জনবল সংকটে ধুঁকছে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। এতে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও দেখা পাচ্ছেন না কাক্সিক্ষত চিকিৎসকের। রোগীদের এক রোগের চিকিৎসা নিতে এসে অন্য রোগের চিকিৎসককে দেখাতে বাধ্য হতে হচ্ছে কিংবা অন্য হাসপাতালে রোগীদের রেফার্ড করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাজার হাজার রোগী।

হাসপাতালের সূত্র অনুয়ায়ী, হাসপাতালের ২২৫ টি পদের বিপরীতে জনবল রয়েছে ১৮৭ জন। হাসপাতালে শূন্যপদ রয়েছে ৩৮ টি। প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার ৩৫ টি পদে আছে ৩ টি শূন্য পদ। দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তাদের ১২২ পদের বিপরীতে ৬ টি পদ খালি রয়েছে৷ ৩য় শ্রেণির কর্মচারীর ২৫ পদেও বিপরীতে ৫ টি পদ খালি রয়েছে। এছাড়া ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর ৪৩ পদের মাঝে ২৪ টি পদ খালি রয়েছে।

 

হাসপাতাল সূত্র থেকে জানা যায় , হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ সিনিয়র কনসালটেন্ট পদে তিনটি শূণ্য পদ রয়েছে। হাসপাতালের শিশু বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট, নাক-কান-গলা বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ও প্রসূতি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট পদে কোন চিকিৎসক নেই। এছাড়াও অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর একজন, নার্সিং সুপারভাইজার দুইজন, সিনিয়র স্টাফ নার্স চারজন, সেবিকা/সেবক পদে দুইজন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফার্মাসিস্ট পদে একটি পদ শূণ্য রয়েছে। এদিকে হাসপাতালের বিভিন্ন পদে আউট সোর্সিং হিসেবে কর্মরত রয়েছে ৩০ জন। এরমধ্যে অধিকাংশই ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী।

হাসপাতাল সূত্র আরো জানায়, প্রতিদিন এই হাসপাতালে হাজার খানেক রোগী বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নেন। প্রায় সময় অধিকাংশ ভর্তি রোগীতে শয্যা পূর্ণ থাকে। স্বল্পজনবল দিয়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

 

সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের দীর্ঘ লাইন। অধিকাংশ রোগীর মুখে হতাশার ছাপ। কারণ সরকারি অর্থে চিকিৎসা করতে এসে হয়তো নির্ধারিত ডাক্তার পায়নি না কিংবা রোগ নির্নয় পরীক্ষা করতে হচ্ছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

এমনই একজন ভুক্তভোগী ফতুল্লার আসমা আক্তার। দীর্ঘদিন দুই কান নিয়ে ভুগছেন তিনি। এসেছিলেন কানের চিকিৎসা করাতে। কিন্তু কানের ডাক্তার না থাকায় তিনি সাধারণ মেডিকেল অফিসারকে দেখাতে বাধ্য হন।

তিনি বলেন, কি করবো, কানের ডাক্তার তো নেই। প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে ভিজিট দিয়া ভালো ডাক্তার দেখাতে পারি। কিন্তু এতো বড় হাসপাতালে এসেও যদি ডাক্তার দেখাতে না পারি তাহলে সব গরিবের কপাল। রোগের টেস্টও করাইতে হইছে বাহিরের হাসপাতাল থেকে। এই চিকিৎসায় ভালো না হলে অন্য জায়গায় দেখান লাগবে।

 

হাসপাতালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ২য় শ্রেনীর কর্মচারী বলেন, আমাদের হাসপাতালে যে সংখ্যক পদ রয়েছে, সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। আর যে পরিমান পদ আছে সেখাানে শূন্য পদ রয়েছে। আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন হাজার হাজার কর্মচারীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বহি.বিভাগে চিকিৎসা নিতে প্রচুর রোগী আসে। তারা পরীক্ষা হাসপাতালে করাতে চায়। কিন্তু হাসপাতালে মেশিন থাকলেও পর্যাপ্ত টেকনেশিয়ান নেই। যারা আছে, তাদের পক্ষে এতো পরিমান রোগীর পরীক্ষার করা কষ্ট দায়ক হয়ে পড়ে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ( আরএমও) এস কে ফরহাদ এ বিষয়ে বলেন, আমাদের হাসপাতালের সকল পদের বিপরীতে জনবল নেই। আমাদের তিনজন সিনিয়র কনসালটেন্ট প্রয়োজন। এছাড়া নার্স ও অ্যাম্বুলেন্স চালক সহ ৪র্থ শ্রেনীর একাধিক পদ খালি রয়েছে। এসব জনবলের ঘাটতি পূরণ হলে আমারা আরো ভালো চিকিৎসা সেবা দিতে পারব।

জেলার সিভিল সার্জন মশিউর রহমান এ বিষয়ে বলেন, জেনারেল হাসপাতালে জনবল সংকট রয়েছে। তবে আমাদের এই জনবল দিয়েই আমরা আমাদের সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যে জনবলের প্রয়োজন জানিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রানালয়ে আবেদন করেছি। শীঘ্রই আশা করছি প্রয়োজনীয় জনবল পাওয়া যাবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort