রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
এবার কি অন্যের ঘরভাঙার কারণ হচ্ছেন সামান্থা? সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও বাড়ল তারেক রহমানের নেতৃত্বেই বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব : গিয়াসউদ্দিন ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গুর কিট দিল নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন সিদ্ধিরগঞ্জে একাধিক হত্যা মামলার আসামি যুবলীগ নেতা এল এক্স খোকন গ্রেপ্তার সিদ্ধিরগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত, চালক ও হেলপার আটক ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে মা ফোন করে জানান কাঠমান্ডুগামী বিমানে বোমা সোনারগাঁও সরকারি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠন সোনারগাঁ পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন মাকসুদ চেয়ারম্যানকে বন্দরের মাটিতে নির্বাচন করতে দিবো না : সাখাওয়াত

প্রভাবশালী সংসদ সদস্য জজ মিয়া আর নেই

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৩, ৩.০২ এএম
  • ৩৩৩ বার পড়া হয়েছে

দুইবারের সাবেক একজন সংসদ সদস্য মারা গেছেন। এরশাদ জমানায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের দাপুটে এমপি। অর্থবিত্ত, প্রভাব-প্রতিপত্তি কোনকিছুরই কমতি ছিলনা। মানুষকে দান করেছেন উদারহস্তে।

অথচ কত নিরবে বিদায় ! দূর্বা থেকে শিশির ঝরার মত নিরবে। কেউ জানলনা। টিভি-পত্রিকায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় ব্রেকিং, আলোচনা নেই। জানাজার জমায়েত নিয়ে ফেসবুকের ওয়ালে আওয়াজ নেই।

কি কঠিন প্রস্থান ! শেষযাত্রায় পাশে কেউ ছিলনা, কিছুই ছিলনা তার। রোগেশোকে কাবু একসময়ে প্রভাবশালী এমপি জজমিয়ার তিনবেলা খাবারও জুটতনা। ছিলনা মাথার উপর একটু ছাউনিও। এরপর জায়গা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। সেখানেই আজ শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।

জীবনে কিছুই নিজের করে রাখতে চাননি। সব উজার করে দিয়েছেন। প্রথম স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন আমেরিকায়। সঙ্গে নিয়েছেন অঢেল টাকা পয়সা। সন্তান-স্ত্রীর সুখের কথা চিন্তা করে তিনিও সব দিয়েছেন। বিনিময়ে পেয়েছেন বিবাহ বিচ্ছেদ। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। স্ত্রী নাছিমা হক, দুই কন্যা বাবার থেকে আলাদা হয়ে যান। ঢাকার পুরানা পল্টন ও মিরপুর কাজী পাড়ায় বিশাল দুটি বাড়ি তাদের নামে লিখে দেন জজ মিয়া। স্থানীয়ভাবে থাকা সম্পদ বিক্রি করেও টাকা দেন তাদের। সবশেষ নিজের সম্পত্তি বলতে ছিল ১২ শতাংশ জমি, তাও লিখে দেন মসজিদের নামে।

রোগশোকে কাবু জজমিয়া কেবল টিকে থাকতে তৃতীয় বিয়ে করেন। ততদিনে তিনি নি:স্ব। ছোট্ট এক সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে একরুমের ভাড়া বাসায় কেটে যাচ্ছিল জীবন।

না জীবন সায়াহ্নে কেউ আসেনি। নিভু নিভু বয়ে চলা জীবনটাকে একটু উজ্জ্বল আলো দিতে ফিরে তাকায়নি সন্তানরাও । একসময়ের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য দু’মুঠো খাবারের জন্য মানুষের কাছে হাত পেতেছেন। সাবেক সেনা কর্মকর্তা, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা (সার্টিফিকেট নেননি) মাথা গোঁজার ঠাইয়ের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা নিয়েছেন। ওষুধের টাকার জন্যেও ঘুরেছেন দুয়ারে দুয়ারে।

সংসদ সদস্য থাকাকালীন অজস্র মানুষকে চাকরি দিয়েছিলেন। সন্তানদের অভাব বুঝতে দেননি। বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও সন্তানদের সুখের জন্য নিজের উপার্জিত সব দিয়েছেন। কিন্তু একটাবারও কেউ ফিরে তাকায়নি। কেউ খবর নেয়নি জন্মদাতা কেমন আছেন ! দু:খ, কষ্ট, রোগ-শোক আর অভিমানে সেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে মারা গেছেন জজ মিয়া। কিন্তু একটা শিক্ষা দিয়ে গেছেন আমাদের।

প্রকৃতি বড় নির্মম। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। সম্পদ হাতবদলের সঙ্গে সঙ্গে মালিকানাও স্থানান্তরিত হয়। কখনো সব উজার করে কাউকে দিতে হয়না। ঘুরে দাঁড়াতে যতটুকু দরকার, ততটুকু অন্তত রাখতে হয়। মানুষের আপন বলতে নিজে ছাড়া আদতে কিছুই নেই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort