শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন

পরকীয়া দেখে ফেলায় মেয়েকে খুন করে মাইকিং

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ৪.১৩ এএম
  • ৪১০ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লার দেবিদ্বারে পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থা দেখে ফেলায় নিজ শিশু সন্তানকে খুন করেছে আমির হোসেন নামের এক পাষণ্ড পিতা। আর এতে সহায়তা করেন পরকীয়া প্রেমিকা লাইলী আক্তারসহ অপর ৩ ভাড়াটে খুনি।

এদিকে খুনের পর শিশুটির বাবা নিজেই থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন। এমনকি এলাকায় মাইকিংও করেন।

এ ঘটনায় র‌্যাব ফাহিমার ঘাতক বাবাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। বুধবার বিকালে গ্রেফতার ৫ জনকে দেবিদ্বার থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।

তারা জানায়, পরকীয়া প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তির দৃশ্য দেখা ফেলায় বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ার আশংকায় প্রথমে ছুরিকাঘাত এবং পরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে খালে ফেলা দেয়া হয়।

গত ৭ নভেম্বর রাতে এ ঘটনা ঘটেছিল জেলার দেবিদ্বার পৌর এলাকায়। ফাহিমা পৌর এলাকার চাঁপানগর গ্রামের আমির হোসেনের কন্যা।

সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন। এছাড়াও একই ঘটনার বিষয়ে বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ৭ নভেম্বর বিকাল থেকে দেবিদ্বার উপজেলার চাঁপানগর গ্রামের আমির হোসেনের মেয়ে ফাহিমা আক্তার নিখোঁজ হয়। এ বিষয়ে তার বাবা দেবিদ্বার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ঘাতক বাবাই মেয়েকে খুঁজে পেতে এলাকায় মাইকিং করেন। ১৪ নভেম্বর দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের কাচিসাইর গ্রামের একটি খাল থেকে ওই শিশুর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি তদন্ত শুরু করে র‌্যাব। র‌্যাবের তদন্তে বেড়িয়ে আসে পরকীয়া প্রেমিকার পরিকল্পনা অনুসারে শিশু ফাহিমাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। মঙ্গলবার রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে হত্যায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

গ্রেফতাররা হলেন- ফাহিমার ঘাতক বাবা আমির হোসেন (৩০), একই বাড়ির পরকীয়া প্রেমিকা লাইলি আক্তার (৩০), একই এলাকার রবিউল আউয়াল (১৯), রেজাউল ইসলাম ইমন (২২) ও সোহেল রানা (২৭)।

বুধবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গ্রেফতারকৃতদের বিকালে দেবিদ্বার থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিমের বাবা আমির হোসেন জানিয়েছে প্রতিবেশী লাইলি আক্তারের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। গত ৫ নভেম্বর তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে শিশু ফাহিমা। এতে লাইলি আক্তার ও আমির হোসেন ভয় পেয়ে যায়। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যেতে পারে এমন আশংকায় ফাহিমাকে খুন করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে। পরে টাকার বিনিময়ে ভাড়া করা হয় এলাকার রবিউল আউয়াল, রেজাউল ইসলাম ইমন ও সোহেল রানাকে।

র‌্যাব অধিনায়ক আরও বলেন, ঘাতকরা ফাহিমাকে হত্যার পুরো বর্ণনা দিয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে ফাহিমাকে খুন করতে গত ৭ নভেম্বর বিকালে তার বাবা বাড়ি থেকে কৌশলে বাড়ি থেকে নিয়ে বের হন। রাতে দেবিদ্বার পুরান বাজারের দক্ষিণে নদীর তীরে ফাহিমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমির হোসেন প্রথমে তার মেয়েকে ছুরিকাঘাত এবং লাইলী আক্তারসহ অন্যরা হত্যায় সহায়তা করেন। পরে মরদেহ বস্তায় ভরে ঘাতক রেজাউল ইসলাম ইমনের ঘরে একদিন লুকিয়ে রাখে। পর দিন ৯ নভেম্বর রাতে বস্তা ভর্তি লাশটি একটি খালে ফেলে দেয়া হয়।

দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে থানা পুলিশ তদন্তে র‌্যাবকে সহায়তা করেছে। এতে স্বল্প সময়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য বের হয়েছে। র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃতদের বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort