রাজধানীর উত্তরায় গার্ডার চাপায় একই পরিবারের ৪ জন নিহতের রেশ কাটতে না কাটতেই, এবার নারায়ণগঞ্জে ৭ তলা ভবন থেকে হাতুড়ি পড়ে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন মা ও শিশু সন্তান। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকাল পৌঁনে ৬ টায় ফতুল্লার অক্টো অফিস এলাকায় ওই ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার পরই নির্মানাধীন ৭ তলা ভবনটি থেকে হাতুড়ি পড়ে টাইলস ভেঙ্গে যাওয়া ছবি ও হাত থেকে পরে যাওয়া মিস্ত্রির স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। জানা যায়, নির্মানাধীন ভবনটিতে কোন রকম নিরাপত্তা বেষ্টনী নেই। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকার সাধারণ মানুষ চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভুক্তোভগী মা ইসরাত জাহান বলেন, আমার তিন বছরের শিশু বাচ্চাকে নিয়ে ওই ভবনের নীচ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সেই সময় হঠাৎ আমার সন্তানের প্রায় মাথার সামনে দিয়ে হাতুড়ি ৭ তলা ওপর থেকে পড়ে। অল্পের জন্য আজকে আমার ছেলের কিছু হয় নাই, আল্লাহ রক্ষা করেছেন। তাছাড়া এদের নির্মানাধীন ভবনটির কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল না।
ভবনে কাজ করা মিস্ত্রি জানান, হাতুড়ি দিয়ে কাঠ ছুটাতে গিয়ে হাতুড়িটি হাত ফসকে পড়ে গেছে। এক্ষেত্রে তারা মালিক পাভেলকে বলেছিল কাজ করার সময় একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে দিতে। কিন্তু মালিক পাভেল তা আদৌ করেনি।
প্রতক্ষ্যদর্শী কাসফা টাওয়ারের মেরিন প্রকৌশলী মোর্শেদ ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমার চোখের সামনে ঘটেছে। অল্পের জন্য ওই গৃহবধূ পথচারী ও তার শিশুটি রক্ষা পেয়েছে।
মুদী দোকানী সেলিম মিয়া জানান, হাতুড়িটি যে টাইলসের সিঁড়িটিতে পড়েছে সেটি অবৈধ সিঁড়ি। সেটি কোন অনুমোদন নেই রাজউকের। এলাকার সবাই এটা জানে। কিন্তু মালিক পাভেল রাজউক এক আত্মীয় পরিচয়ে প্রভাব খাটিঁয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই কোন নিয়ম না মেনে ওই বাড়িটি নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সে ফটুপাত দখল করে সিঁড়ি নির্মাণ করেছে। এটি দেখেও দেখনে না কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে ৭ তলা ভবনের মালিক জানান, আমি রিলায়েন্স নাম দিয়ে ওই ভবনটি মূলত ফ্ল্যাট ব্যবসার জন্য তৈরী করছি। কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়নি । মনে করেছিলাম কিছু হবে না। তবে ঘটনাটি ঘটেছে শুনেছি। কি বলব বুঝতে পারছি না।
সিঁড়িটি অবৈধ কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা রাজউকের সাথে সমঝোতা করেই করেছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রহিমা আক্তার জানান, বিষয়টি শুনেছি। ভিডিওটি দেখেছি। আইনগত ব্যবস্থা নেব।