শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ অপরাহ্ন

৬ বছর অগ্রাধিকারমূলক বাজারের প্রবেশ সুবিধা চান প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ মার্চ, ২০২৩, ৩.৫১ এএম
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশসহ থেকে ‍উত্তরণ পর্যায়ে থাকা স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অন্তত ছয় বছর অগ্রাধিকারমূলক বাজারের প্রবেশ সুবিধা দেওয়াসহ উন্নয়ন অংশীদারদের সামনে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি-৫) সাইড লাইনে মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) বিকেলে কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে ‘গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফর স্মুথ অ্যান্ড সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন: মার্চিং টুওয়ার্ডস স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়ন অংশীদারদের কাছে ৫টি সুপারিশ করতে চাই। প্রথমত, বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য কমপক্ষে ছয় বছরের জন্য বাজারে অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশ সুবিধা এবং বাণিজ্যের জন্য সহায়তার মাধ্যমে এসব দেশের বাণিজ্য সহজীকরণ এবং সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করা।

দ্বিতীয়ত, বেসরকারি খাতে প্রণোদনার মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে এফডিআই (ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) প্রবাহ বাড়ানো এবং পরস্পরের জন্য লাভজনক বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি হালনাগাদ করার সুপারিশ করেন তিনি।

তৃতীয়ত, দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপণার জন্য বেসরকারি খাতকে সহায়তা করা, শিল্প সম্পর্ক উন্নয়ন এবং ন্যায্যমূল্য নির্ধারণসহ উত্তরণ পর্যায়ে থাকা এলডিসিতে টেকসই শিল্প প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

চতুর্থ সুপারিশ তিনি বলেন, উদ্ভাবনী অর্থায়ন পদ্ধতির উন্নয়ন করা, যাতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ পর্বে ঋণের খরচ টেকসই থাকে।

পঞ্চম সুপারিশে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর টেকসই ভৌত ও ডিজিটাল অবকাঠামো প্রকল্পে অর্থায়ন, এসব দেশের মানব সম্পদ তৈরি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে অব্যাহতভাবে সহায়তা করার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার উত্তরণ প্রক্রিয়া থেকে পেছনে যেতে চায় না। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উত্তরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বন্ধুদের থেকে আমাদের নিশ্চিত সহায়তা দরকার। গত ৫১ বছরে ট্র্যাক রেকর্ড থেকে দেখা যায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়ে ন্যায়বিচার করেছে।

বিশ্বের বৃহত্তম এলডিসি অর্থনীতি হিসেবে একটি মসৃণ উত্তরণে অন্য স্বল্পোন্নত দেশসহ সবার সমর্থন ও উৎসাহ প্রত্যাশা করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের জাতিসংঘের তিনটি শর্তই পূরণ করেছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন করে। বাংলাদেশকে মিলোনিয়াম ডেভেলপমেন্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে মডেল হিসেবে বিবেচনা করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। আমরা এখন ২০৪১ সালের মধ্যে একটি জ্ঞানভিত্তিক, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বেসরকারি খাত ও সামাজিক অংশীদারগণ এ যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শেখ হাসিনা বিভিন্ন সেক্টরে তার সরকারের সফলতা তুলে ধরেন, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগণের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা সহায়তা, সরকারি পরিষেবার ডিজিটাইজেশন, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল এবং বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য হাই-টেক পার্ক কথা উল্লেখ করেন।

সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি স্বপ্ন দেখেন বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস এবং রোবোটিক্সে নেতৃত্ব দেবে। আমাদের সরকার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির প্রতি মনোযোগ দিয়ে একটি উদ্ভাবনী বাস্তুতন্ত্রের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমরা আমাদের ঐতিহ্যগত জ্ঞান, জেনেটিক সম্পদ এবং সমুদ্র অর্থনীতির ভালো ব্যবহার করতে চাই।

এ অনুষ্ঠানে ডেনমার্কের উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী ডন জোগেনসেনসহ ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ইউনাইটেড ন্যাশন্‌স ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন, ইউনাইটেড ন্যাশন্‌স কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের শীর্ষ প্রতিনিধিরা প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সমাপনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। সঞ্চালনা করেন জাতিসংঘের জেনেভা অফিসে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি-৫) উপলক্ষে কাতার সফরে আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে শনিবার (৪ মার্চ) কাতার আসেন তিনি। ৮ মার্চ দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort