রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের আঁখি আক্তার (২৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি মো. রুবেলকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সে আঁখি আক্তারের প্রাক্তন স্বামী।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) আসামি রুবেল তার প্রাক্তন স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে দেওয়া তথ্যের বরাতে পিবিআই বলছে, প্রাক্তন স্ত্রীকে অপর এক ছেলের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে রাগের বশে ফল কাটার ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে রুবেল।
গত বছরের ২৫ আগস্ট সকালে উপজেলার বাড়িমজলিশ এলাকায় ছলিমুল্লাহ নামে এক ব্যক্তির ভাড়া বাসা থেকে আঁখি আক্তারের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। নিহত আঁখি বন্দর উপজেলার দেউলি চৌরাপাড়া এলাকার নজরুল ইসলামের মেয়ে। এই ঘটনায় নিহতের ভাই খোরশেদ আলম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি মো. রুবেল পলাতক ছিলেন।
পিবিআই জানায়, আঁখি হত্যা মামলায় থানা পুলিশ দুইজন আসামিকে গ্রেফতার করে। গত বছরের ২৫ নভেম্বর পুলিশের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়। পরে পিবিআই’র পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেন উপপরিদর্শক মো. বদিউজ্জামান ভূঞাকে। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে হত্যার শিকার আঁখি আক্তারের প্রাক্তন স্বামী রুবেলকে চট্টগ্রাম শহরের খুলশীর বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল গেইটের সামনে থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। গ্রেফতার রুবেল সোনারগাঁ উপজেলার মুগারচর এলাকার মফিজুল ইসলামের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদে সে তার প্রাক্তন স্ত্রী আঁখিকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পিবিআই। বৃহস্পতিবার সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে।
রুবেল পিবিআইকে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তার স্ত্রী আঁখি পরকীয় জড়িত ছিলেন। এই কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে আঁখি ক্ষমা চেয়ে পুনরায় সংসার করার ইচ্ছা পোষণ করেছিল বলে দাবি করেছেন রুবেল। গত বছরের ২৫ আগস্ট বেলা ১২টায় সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তার মোড়ে তাদের সাক্ষাতের কথা ছিল। রুবেলের ভাষ্যমতে, ওইদিন তিনি জানতে পারেন তার প্রাক্তন স্ত্রী আঁখি এক ছেলের সাথে একটি কক্ষে অবস্থান করছে। এমন খবর পেয়ে সে সোনারগাঁয়ের বাড়িমজলিশ এলাকায় ভুক্তভোগী আঁখির পূর্বপরিচিত ছলিমুল্লার ভাড়া বাসায় যায়। সেখানে অন্য এক ছেলের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় আঁখিকে। তবে তার সাথে থাকা ছেলেটি দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে চিনতে পারেনি বলে জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছে আসামি রুবেল। এই ঘটনার পর রাগের বশে ফল কাটার ছুরি দিয়ে গলা কেটে প্রাক্তন স্ত্রীকে হত্যা করে রুবেল।