ফাহাদুল ইসলাম সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ বারবার অভিযানেও বন্ধ হচ্ছে না সোনারগাঁ অবৈধ গ্যাস সংযোগের রমরমা কারবার। গেল কয়েক বছরে দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে সোনারগাঁয়ে বিভিন্ন এলাকার কয়েক লাখ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেও কোনো লাভ হয়নি। তিতাস গ্যাসের অসাধু কিছু ঠিকাদার এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের একটি মহল টাকার বিনিময়ে বিচ্ছিন্ন সংযোগে গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা করছে, তেমনি দিচ্ছে নতুন সংযোগও। পাশাপাশি ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে কথিত গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতি মাসের আদায় করা হচ্ছে বিলও। এতে একদিকে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে তেমনি বৈধ গ্রাহকরা ভুগছেন গ্যাস সংকটে। এ ছাড়া নিম্নমানের সংযোগ উপকরণের কারণে বাড়ছে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনার ঝুঁকিও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনারগাঁ পৌরসভা (৭নং ওয়ার্ডের) দৈলেরবাগ মসজিদ সংলগ্ন মিষ্টি বাড়ী কারখানায় নিম্নমানের গ্যাস সামগ্রী ব্যবহার করে, অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানহীন মিষ্টি ও সানা তৈরি করে বাজারজাত করছে।
এ বিষয়ে মিষ্টি বাড়ী কারখানার মালিক আলমগীর জানান, সবাই তো অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তেমনি ভাবে আমি ও সংযোগ দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি, এতে সমস্যা কোথায়, আর আপনাদের সমস্যা কী? কি চাঁন আপনারা। লাখ লাখ টাকা দিয়ে সংযোগ নিছি। প্রতি মাসে গ্যাস বিল দিতেছি। মাঘনা গ্যাস ব্যাবহার করিনা। তবে কাকে এ গ্যাস বিল দেন তিনি তা স্পষ্টভাবে জানায়নি।
অবৈধ গ্যাস নিয়ে স্থানীয়রা জানান, সোনারগাঁয়ে এরকম অনেক বেকারি ও কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের লাইন আছে, যার কারণে বৈধ সংযোগ ওয়ালাদের গ্যাস সংকটে ভুগতে হচ্ছে। তাদের দাবি তিতাসের কিছু অসাধু ঠিকাদার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সংযোগ নিতে আগ্রহী লোকজনকে নানা ধরনের প্রলোভন দিতে থাকে। তারা বোঝায়, ‘এখন সংযোগ নিয়ে রাখলে কিছুদিন পর এটা বৈধ হয়ে যাবে।’ এতে ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার বিনিময়ে সংযোগ নেন অনেকে। তবে সেখানেও প্রতারণা করা হয় সংযোগ প্রার্থীদের সঙ্গে। নিম্নমানের পাইপ, এমনকি প্লাস্টিকের পাইপ বা কোথাও হোস পাইপ দিয়ে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয় তাদের। তিতাসের ভুয়া কাগজে প্রতিমাসে তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয় বিলও। পরে তা ভাগবাটোয়ারা করা হয় নিজেদের মধ্যে। সেই অর্থে অনেকেই করেছেন বাড়ি-গাড়ি।
আবার অনেক বৈধ গ্রাহকের মূল লাইন থেকে বাইপাস করে লাইন বের করে অন্য বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য নেওয়া হচ্ছে ৭০ থেকে এক লাখ টাকা।
তিতাস গ্যাস সোনারগাঁ আঞ্চলিক অফিসের সহ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সুরুজ আলম , ২০২০ সালের শুরু থেকে ২০২১ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলার ২৩৭ কিলোমিটার অবৈধ লাইন শনাক্ত করে তা উচ্ছেদ করা হয়। একই সাথে ৪৭ হাজার ৭৭৭টি বাড়ির ১ লাখ ৬৮৫টি ডাবল চুলার অবৈধ সংযোগ খুলে ফেলা হয়।
আমরা সোনারগাঁয়ে এ সেপ্টেম্বর মাসে আবাসিক ও বাণিজ্যিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন শুরু করেছি। প্রায় ১০ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলছি। ধারাবাহিকভাবে এ মাসের মধ্যে সঠিক তথ্যের এর মাধ্যমে আমরা অবৈধ সংযোগ গুলো বিচ্ছিন্ন করব। এতে গণমাধ্যম কর্মীসহ জনপ্রতিনীদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতার কামনা করেন।