সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : কখনো সিএনজির ড্রাইভার আবার কখনো লেগুনার ড্রাইভার। সিদ্ধিরগঞ্জে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সাদ্দাম হোসেন মুন্না ওরফে লেগুনা মুন্না। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন বিভিন্ন শিল্পকারখানার মালিক ও পরিবহন মালিকরা।
বিভিন্ন কারখানার মালিকদের অভিযোগ সাদ্দাম হোসেন মুন্না ওরফে লেগুনা মুন্না নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকেন। প্রায় সময়ই কারখানার মালিকদের সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। মোটা অংকের টাকা নিয়েও থেমে থাকেন না লেগুনা মুন্না। তার কথা মতো প্রতি মাসে তাকে ভালো অংকের মাসোয়ারা (চাঁদা) দিতে হবে। প্রতিমাসে এই মাসোয়ারা না দিলেই তার সিন্ডিকেটের সদস্যর নিয়ে প্রতিষ্ঠানে এসে ছবি তুলে এবং শ্রমিকদের সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখান। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জালি কারখানার মালিক জানান, আমাদের কারখানায় গ্যাসের মাধ্যমে কোন পণ্য তৈরি হয় না। যা হয় সব বৈদ্যুতিক লাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কিন্তু মুন্না নামে এক ব্যাক্তি আমাদের কারখানায় এসে অবৈধ গ্যাসের লাইন আছে বলে নিউজ প্রকাশের হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তিনি প্রতি মাসে তাকে (চাঁদাবাজ লেগুনা মুন্নাকে) পাঁচ হাজার করে টাকা দিতে বলেন। তার অত্যাচারে আশপাশের ব্যবসায়ীরাও অতিষ্ঠ। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাংবাদিক পরিচয়দানকারী সাদ্দাম হোসেন মুন্না ওরফে লেগুনা মুন্না বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদাবাজি করে লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গেছেন। এই চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে মুন্না প্রথমে ৬টি লেগুনা ক্রয় করেন। যা মহাসড়কে চলাচল সম্পূর্নভাবে অবৈধ। এসব লেগুনা শিমরাইল মোড় থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত চলাচল করে। মুন্না তার ছয়টি লেগুনা থেকে তিনটি বিক্রি করে দিয়েছেন। তারপরও পুলিশকে ম্যানেজ করে তার লেগুনা চলাচল করছে বলে জানা যায়। বর্তমানে তার লেগুনা রয়েছে তিনটি। অভিযোগ রয়েছে, তার নিজস্ব লেগুনা থাকার পরও তিনি অন্য লেগুনা মালিকদের থেকে চাঁদা দাবী করেন। তাকে চাঁদা না দিলে তিনি পুলিশ দিয়ে গাড়ি রেকার করাবেন বলে অন্য লেগুনা মালিকদের হুমকি দেন। তার এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে পরিবহন মালিকরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেশাদার এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় ভুয়া সাংবাদিকদের ছড়াছড়ি ও গাড়িতে প্রেস লিখে করছে চাঁদাবাজি। তারা বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকার জাল পরিচয় পত্র ব্যবহার করে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করে। এতে বিপাকে পড়ছেন পেশাদার সাংবাদিকরা এছাড়াও তাদের মোটরবাইকেও লাগানো থাকে টেলিভিশন চ্যানেলের স্টিকার এরা এমনভাবে টেলিভিশন চ্যানেলের স্টিকার ক্যামেরায় লাগিয়ে নেয় এটা কি টেলিভিশন চ্যানেলের কিনা বোঝা বড় দায়। এখন তো শত শত ভুইঁফর টেলিভিশন চ্যানেল বের হয়েছে তা কোনটা আসল আর কোনটা নকল বোঝা বড় দায়। এইসব ভুয়া সাংবাদিকদের থার্ড বাট এমন যে তাদের সাধারণ মানুষ সহজে ধরতে পারে না। এমনকি পেশাদার সাংবাদিকরা তাদের দেখে মাঝেমধ্যে বিভ্রান্ত হন। তারা অনেকেই দামি গাড়িতে চলাফেরা করে। আর ক্যামেরায় জাল স্টিকার লাগিয়ে মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এদের মধ্যে ট্রাক ড্রাইভার, সিকিউরিটি গার্ড, ব্যবসায়ী, দারোয়ান, পান ও বাদাম বিক্রেতা, হকার এবং পুলিশের সোর্সও রয়েছে। এ সকল ভুয়া সাংবাদিকদের আখড়া এখন সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড এলাকায়। সম্প্রতি দেখা যায় নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় কোন পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে সেখানে উপস্থিত কথিত ভুয়া সাংবাদিকরা সেই ব্যক্তির কাছে গিয়ে চাঁদা দাবি করে এমনকি প্রতিবাদ ছাপিয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা।
এদের কাজ হলো বিভিন্ন ধরনের কারখানা থেকে শুরু করে ফুটপাতে ২০ থেকে ৫০ টাকার চাঁদাবাজি করা আর রাত হলে থানার গেটে বিভিন্ন মামলার তদবির করা। বিশেষ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সামনে গেলে দেখা যায় বেশ কিছু নামধারী সাংবাদিক দিনের বেলায় সোর্স আর রাতের বেলা সাংবাদিক । এসব কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান তিনি।