বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সাফল্যের শেষ নেই, শেষ আছে ব্যর্থতার নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ৩ প্যানেলের মনোনয়নপত্র জমা বন্দরে লুন্ঠিত রড উদ্ধারসহ ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় মামলা ফতুল্লায় ১৭ টন নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ, ৫ লাখ টাকা জরিমানা রূপগঞ্জে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে পানিবন্দী মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান কী স্বার্থ উদ্ধার ক‌রে বিদায় নি‌লেন সোনারগাঁ এসিল‌্যান্ড মঞ্জুরুল মো‌র্শেদ ! শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মায়ামিতে খেলতে চায় বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের আপত্তি ছেলের জন্মদিনে পরীমণির জমকালো আয়োজন, রাখলেন চমক! বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল, কিছু উদ্বেগ রয়ে গেছে

সাফল্যের শেষ নেই, শেষ আছে ব্যর্থতার

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫, ১.০৫ পিএম
  • ১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মামুন হোসেন: মানবজীবন অধ্যায়ের দুটি -একটি জন্ম- অপরটি মৃত্যু। মাঝখানে কিছু সময়ের ব্যবধান। এ ব্যবধানের মাঝে মানুষের সুখ- দুঃখ হাসি-কান্না, ব্যথা বেদনা, বিরহ- মিলন জরিত। কিন্তু মৃত্যু নিয়তির অমোঘ বিধান। আর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সত্য হচ্ছে, মানুষের মৃত্যু। এই চরম সত্য জানা সত্বেও কেউ মরতে চায় না। কিন্তু কেন? এটাই আশ্চর‍্য। এই পৃথিবীর সবচেয়ে মহা আশ্চর্য হলো- মানুষ মৃত্যু নিশ্চিত যেনও মুমূর্ষ অবস্থায় সে বাঁচতে চায়। এর চেয়ে আশ্চর্যের আর কি থাকতে পারে? তার কারণ তো একটাই- মানুষ এই ধুলির ধরনীকে মনে প্রাণে ভালোবাসে। তাই এই ধরণীর রূপ-রস-গন্ধ স্পর্শ আমাদের সত্তার সাথে মিশে যায়। তাইতো অন্তরের মাধুরী মিশিয়ে সুন্দর ধরিত্রীর প্রতিটি বস্তুকে ভালবেসে বেঁচে থাকা, মানুষের চিরন্তন বাসনা। আরো কারণ মানুষের স্রষ্টার দেয়া খাদ্য ও পানি গ্রহণ করে এবং স্বাদ, গন্ধ, উপভোগ করে। মানবাত্না এই সুন্দর ভুবনে বেঁচে থাকে, তবুও মানুষ মৃত্যু কামনা করে না। সেই সুন্দর মাতৃরূপ সুশীতল পৃথিবীর বুকে বাঁচতে চায়। তার বাঁচার আশা চিরন্তন। যদি আমরা সকলে প্রভুর কাছে প্রত্যাশা করি- এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে কোথাও যাবো না। প্রভু শুধু এই বিরাট পৃথিবীতে সামান্য একটুখানি স্থান চিরনির্দিষ্ট করে রাখতে পারো না। তারপরেও বাচতে হবে। বাচার নামই জীবন সংগ্রাম। যার জীবনে যত প্রতিঘাত জীবন সংগ্রামে সেই অভিজ্ঞ বীর। জীবনের রয়েছে নিজস্ব চলার গতি, ছন্দ বৈচিত্র। কেউ জীবন সংগ্রামে গন্তব্যে পৌঁছে আর কেউ মাঝপথে থেমে যায়। তার লক্ষ্য স্থির থাকাটা সবচেয়ে উত্তম। এই জন্য বহু বাধা অতিক্রম করতে হয়। সেই জন্য চাই তীব্র আকাঙ্ক্ষা আর নিয়তির পরিশ্রমের মাধ্যমে অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলা। মানব জীবনটাই কর্মময়। কর্মময় অর্থাৎ পরিশ্রম। পরিশ্রমের অপর নাম জীবনের স্রোত। এই স্রোত সাফ্যলের স্রোত। তাই তো সাফ্যলের শেষ নেই, শেষ আছে ব্যার্থতার-কথাটি সত্য।কিন্তু আমাদের জীবনে ঘটে যেন এর উল্টোটা। আমাদের হতাশা ও অধৈর্যের জন্য সাফল্যের মুখ আমরা সহজে দেখতে পাই না। দেখি শুধু ব্যর্থতার মলিন চেহারা। কোন একটি কাজে দু- একবার ব্যর্থ হলে- আমরা মনে করি সব শেষ আর কোন আশা নেই, ভাবতে থাকি সাফল্য আমাদের জন্য নয়, যাদের কপাল ভালো। যারা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম নিয়েছে, সাফল্য তাদের জন্য। কিন্তু এই চরম সিদ্ধান্ত টা নেয়ার আগে– ইতিহাস সৃষ্টিকারী একটা ঘটনা নিজের অনুভূতি দিয়ে বোঝা উচিত। তারপর সিদ্ধান্ত- আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আবিষ্কারক ছিলেন- টমাস আলভা এডিসন তিনি ছিলেন খুবই অলস। তাই তার মা স্কুল থেকে এনে বাড়িতে পড়াতে লাগলেন। কিন্তু তরুন এডিসন দুই হাজার বার চেষ্টা করে। তিনি আবিষ্কার করেছিলেন ইলেকট্রিক বাৰ। এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেছিলেন- দুই হাজার বার ব্যর্থ হবার অনুভূতি কেমন? এডিশনের ভাষায়- আমি একবারও ব্যর্থ হইনি। বাল্বটা আবিষ্কারের দুই হাজার প্রক্রিয়া ছিল। আমি শুধু সেইসব অনুসরণ করছি। তিনি আরো বললেন- এক শতাংশ মেধা আর ৯৯ শতাংশ পরিশ্রম। মানুষের জীবনে হাসি আর আনন্দের পাশাপাশি দুঃখ-কষ্ট, জরা-ব্যাধিসহ নানना বিপর্যয় আসবেই। অনেকেই এতে এতই ভেঙে পড়েন যে তাঁরা আর ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি, সাহস ও মনোবল হারিয়ে ফেলেন।
ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা মানুষের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা থাকে না।এবার দেখা যাক কীভাবে এই ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা বাড়ানো যায়। বিশ্ব বিখ্যাত জনপ্রিয় লেখক ডেল কার্নেগি তাঁর প্রশিক্ষণ ক্লাসে ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা বাড়াতে সাতটি পদ্ধতি শেখাতেন। এগুলো হলো-১. সামাজিক হও; মানুষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখো। ২. হাসি খুশি থাকো। ৩. অন্যের বিষয়টা তাঁর হয়ে বোঝার চেষ্টা করো। ৪. হতাশাবাদী বা নেগেটিভ মানুষের কাছ থেকে দূরে থাকো। ৫. পরিবর্তনকে মেনে নেওয়ার অভ্যাস করো। ৬. নিজের ভালো কাজ নিয়ে গর্ব বোধ করো। ৭. হার মেলো না, তুমি জয়ী হবেই। পরবর্তীতে ডেল কার্নেগি ট্রেনিং কর্তৃপক্ষ এই ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা বাড়ানোর সাতটি পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেন। পরে তাঁরা এই সাত পদ্ধতির সঙ্গে আরও একটি নতুন পদ্ধতি যোগ করেন। আর, তা হলো-পরিমিত পরিমাণে খাবার খাও এবং পর‍্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাও। এতে যে কাজ হয় তা হলো-১. মানুষের বিশ্বস্ততা বাড়ে। ২. আত্মনির্ভরশীল হওয়া যায়। ৩. উদ্যোক্তা হওয়া যায়। ৪. শক্তি ও সাহস বাড়ে এবং ৫. নিজের ব্যক্তিগত গৌরবের পরিচয় তৈরি হয়।ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে অন্যান্য গবেষকেরাও গবেষণা করে ডেল কার্নেগির এই সাতটি উপায়ের সঙ্গে একমত হন। এ ছাড়া তাঁরা আরও কিছু উপায়ের কথা বলেন। এগুলো হলো-১. নিজ জীবনের একটা অর্থ খুঁজে বের কর এবং সে অনুযায়ী চলো। ২. অভিজ্ঞতা থেকে শেখো। ২. লক্ষ্য নিয়ে কাজ করো। ৪. কাজের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখো।নিজের ভুল থেকে নতুন কিছু শিখতে পারলে পরবর্তীতে সেই ভুল আর করবেন না। অতিরিক্ত অনুশোচনা করে নিজের জীবন বিনাশ করে দেবেন না। জীবনে বাধা-বিপত্তিকে সমস্যা হিসেবে না দেখে নতুন কোনো উপায় বের করুন।মনে রাখবেন, রাত ছাড়া যেমন দিন হয় না তেমনি অন্ধকার না থাকলে আলো কী জিনিস তা বোঝা যায় না। আর আপনি চাইলেই একটাকে বাদ দিয়ে অন্যটা নিতে পারবেন না। আপনাকে নিতে হবে দুটোই। তাই, ব্যর্থতায় অনুশোচনা করবেন না ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা বাড়াবেন সেটা চিন্তা করুন। কারণ ব্যর্থতাকে আপনি চাইলেও জীবন থেকে মুছে দিতে পারবেন না। যা পারবেন তা হলো-ব্যর্থতায় ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে. সামনে যাই আসুক না কেন সমস্যাকে এড়িয়ে চলা যাবে না। সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। বস্তুত হতাশ সবার কিছু নেই। ধৈর‍্য ধরতে হবে ব্যর্থতার গ্লানি একদিন মুছবেই। তারপর আসবে সাফল্যের স্বর্ণের সিঁড়ি। সেই সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠা যায়। এটাই সফলতার ম্যাজিক ফর্মুলা। আর মনে রাখা উচিত- সাফল্যের শেষ নেই, শেষ আছে কেবল হতাশা আর ব্যর্থতার।এখন সাফল্য নির্ভর করছে তোমার উপর। সাফল্য কেউ তোমাকে দিয়ে যাবে না, ছিনিয়েআনতে হবে সফলতার সোনার হরিনকে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort