দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, গুম , খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বাসদের জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ ডিসেস্বর) বিকাল ৩টায় আলী আহমেদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনের (বি.বি.রোড) সামনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় বাম জোটের শীর্ষ নেতা ও বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা কমরেড খালেকুজ্জামান। উদ্বোধনের পরে লাল পতাকা , ফেস্টুন সম্বলিত হাজার হাজার মানুষের বর্ণাঢ্য র্যালী শহর পদক্ষিণ করে।
বাসদের জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা সভাপতি সেলিম মাহমুদ প্রমুখ। সভার শুরুতে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন। পরে নিখিল দাসকে আহ্বায়ক ও আবু নাঈম খাঁন বিপ্লবকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্যবিশিষ্ট বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার নবনিবার্চিত কমিটি ঘোষণা করা হয়। নবনিবার্চিত নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির অন্যেরা হলেন- সদস্য অসিত বরণ বিশ্বাস, সেলিম মাহমুদ, বেলায়েত হোসেন, এম এ মিল্টন, এস.এম কাদির।
এসময় প্রধান অতিথি কমরেড খালেকুজ্জমান তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনে জনগণ আজ বিপর্যস্ত। বিরোধী মতকে দমনের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জারি করেছে। নির্বাচন কমিশনসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান দলীয় প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত হয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকা সত্বেও নির্বাচন কমিশন নিয়োগ প্রণয়ণ আইন সরকার করছে না।
বর্তমান সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস¯ুÍপে পরিণত করেছে। চাল,ডাল,তেলসহ নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতি থামাতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। জ্বালানী তেলের দাম বাড়িয়ে জনগনের দুর্ভোগ আরো বাড়ানো হয়েছে।
একদিকে করোনাকালে দরিদ্র হয়েছে ৩ কোটি ২৪ লাখ মানুষ, কাজ হারিয়েছে কোটি কোটি মানুষ; আরেকদিকে ২৬টি রাষ্ট্রীয় পাটকল ও ৬টি চিনিকল বন্ধ করে দিয়ে ৬০ হাজার শ্রমিকের পেটে লাথি মেরেছে সরকার।
পুঁজিবাদী শাসন শোষনে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গিকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার আজ ভুলন্ঠিত হয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাড়ছে, বিপন্ন হচ্ছে মানবিক মূল্যবোধ। সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন নৈতির অধিকার নেই।
অন্যান্য নেতৃবৃন্দ শ্রমিকের ২০ হাজার টাকা ন্যূন্যতম মজুরি, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা , ক্ষতিপূরণ , নিয়োগ পত্র , পরিচয় পত্র দেয়া এবং ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার ও গণতান্ত্রিক শ্রম আইন চালু করার দাবি জানান । এছাড়া সারাদেশে গণপরিবহনে ছাত্রদের হাফ ভাড়া কার্যকর করার দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে নিখিল দাস শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা দূর্ষণমুক্ত করা এবং দুর্নীতি, গুম, খুন, ধর্ষণ, যানজট ও মাদকমুক্ত নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।