সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫১ অপরাহ্ন

‘শুটার’ ফয়সাল ও বাইকচালক আলমগীর এখন কোথায়?

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২.১৪ পিএম
  • ১ বার পড়া হয়েছে

বহুল প্রত্যাশিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনা ঘটে। প্রায় ৬৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও শুটার ও মোটরসাইকেলচালককে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সন্দেহভাজন দুজনের অবস্থান নিয়েও তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং তার সহযোগী মোটরসাইকেলচালক আলমগীর সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে বলে দাবি করেন। তাদের বর্তমান অবস্থান আসামের গুয়াহাটি শহরে বলেও জানান তিনি।

তবে পুলিশ বলছে, হাদির ওপর হামলার ঘটনায় দুজনকে শনাক্ত করা গেছে। তারা হলেন ‘শুটার’ ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ও মোটরসাইকেলচালক আলমগীর শেখ। তারা দেশে ছেড়ে পালিয়েছেন- এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই। আমরা ধরে নেবো আসামিরা দেশেই আছে, তাদের গ্রেফতার করা হবে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, অপরাধ করে যদি অপরাধী গ্রেফতার না হয় সেক্ষেত্রে অপরাধীদের মনে ভয় কাজ করে না। এই ভয় যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দূর না করতে পারে সেক্ষেত্রে এমন অপরাধের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সন্দেহভাজন কে এই ফয়সাল করিম দাউদ
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফয়সাল করিম নামের এই ব্যক্তি কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের (এখন নিষিদ্ধ) রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তার পুরো নাম ফয়সাল করিম ওরফে দাউদ খান।
ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারসহ বিভিন্ন জায়গায় তার সঙ্গে ফয়সাল করিমের সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ছবি রয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে গুলি করা ব্যক্তির চেহারার সাদৃশ্য থাকায় গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।

ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।

অস্ত্রসহ গ্রেফতার হন ফয়সাল, জামিন নিয়ে প্রশ্ন
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আদাবর থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম। মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সালকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। তখন তার কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, পাঁচটি গুলি, তিনটি মোবাইল ও পাঁচ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাকে এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তার বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ উঠলো। এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি এত অল্প সময়ের (৩ মাস ৮ দিন) মধ্যে কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা–সমালোচনার ঝড় বইছে।

আসামিরা ভারতে পালিয়েছে, দাবি জুলকারনাইন সায়েরের
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে জানিয়েছেন, হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত শুটার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং তার সহযোগী মোটরবাইকচালক আলমগীর গতকাল সন্ধ্যায় (১২ ডিসেম্বর) সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের বর্তমান অবস্থান আসামের গুয়াহাটি শহরে। ভারতে তাদের সহায়তা করছেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মো. মাসুদুর রহমান বিপ্লব। বিপ্লবের তত্ত্বাবধানে হত‍্যাকারীরা ভারতে অবস্থান করছেন।

তিনি দাবি করেন, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ আক্রমণ করা হয়েছে এবং আরও কয়েকটি হিট টিমের একইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তির পরিকল্পনা রয়েছে। শুটার ফয়সাল তার ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছেন ব্যবহৃত অস্ত্রটি জ্যাম হয়ে যাওয়ায় কেবল একটি গুলি করতে সক্ষম হন, তার পরিকল্পনা ছিল চারটি গুলি করার।

এদিকে স্থানীয় সূত্র জানায়, শুটার ফয়সাল ও আলমগীর শুক্রবারই ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ভুটিয়াপাড়া সীমান্ত দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে গেছে। ঘটনার পরপরই একটি প্রাইভেটকারে প্রথমে মিরপুর থেকে আশুলিয়া পরে গাজীপুর হয়ে ময়মনসিংহে ঢুকে। ময়মনসিংহে থেকে সেই প্রাইভেটকার পাল্টে ফেলে তারা।

তারা অন্য আরেকটি প্রাইভেটকারে উপজেলার ধারাবাজার পেট্রোল পাম্পে পৌঁছায়। সেখান থেকে স্থানীয় একজন ব্যক্তি তাদের মোটরসাইকেলযোগে ভুটিয়াপাড়া সীমান্তে নিয়ে যায়। স্থানীয় ওই ব্যক্তিকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে সেই সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করা অন্য যে দুইজন ছিল তাদের আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুজনকে তাদের সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, পরে আরেকজন রিসিভ করে নিয়ে যায়।

ধরে নেবো আসামিরা দেশেই আছে, গ্রেফতার করা হবে
হাদির আসামিরা ভারতে পালিয়ে গেছে কি না জানেত চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি সরকারের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। আমি যে তথ্য দেবো সেটা অথেনটিক; না হলে তা বলতে পারি না। আমিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি আসামি পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি। আমরা বিজিবিকে সতর্ক করেছি এ ধরনের আসামিরা যেন পারাপার না হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ইমিগ্রেশন ডেটাবেজ চেক করে এখন পর্যন্ত তাদের দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সব ইমিগ্রেশনে দুই সন্দেহভাজন আসামির পাসপোর্ট ব্লক করা আছে। তারা যদি দেশে থাকে আমরা তাদের গ্রেফতার করবো। বিদেশে কেউ পালিয়ে গেছে কি না তা নিশ্চিত নয়। আমরা ধরে নেবো আসামিরা দেশেই আছে। আমরা তাদের ধরবো।’

শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী এলাকার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘অপরাধীরা দেখছে গুলি-হামলা করে খুব একটা বাধার সম্মুখীন হচ্ছে না। বরং তাদের হামলা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রেষারেষির প্রতিযোগিতা চলে। কোনো হামলা, আক্রমণ বা অপরাধ নিয়ে যখন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রেষারেষির প্রতিযোগিতা চলে তখন অপরাধীরা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো অপরাধীদের মধ্যে ভয়ের জায়গা তৈরি করতে পারেনি। অপরাধী যে রাজনৈতিক দলের পরিচয়েই থাকুক না কেন তাদের আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করলে পরিত্রাণ ঘটবে।’

সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা বিজিবির
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের সব সীমান্ত এলাকায় নজরদারি ও তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে পার্শ্ববর্তী দেশে কিংবা অন্য দেশে থেকে কেউ দেশে অনুপ্রবেশ করতে পারবে না। বিজিবি এক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব, ঢাকার দাবি প্রত্যাখ্যান দিল্লির
পুলিশ সন্দেহভাজনরা দেশে আছে দাবি করলেও সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে তারা যদি প্রবেশ করে থাকে তাহলে গ্রেফতারের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

ভারতে বসে বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের দ্রুত অবসান চায় ঢাকা। রোববার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে এই বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার চেষ্টায় জড়িত সন্দেহভাজনেরা ভারতে প্রবেশ করলে গ্রেফতারের আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস নোটে উত্থাপিত বক্তব্যসমূহ স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে ভারত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে ভারতের অবস্থান আমরা ধারাবাহিকভাবে পুনর্ব্যক্ত করে আসছি। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের স্বার্থের পরিপন্থি কোনো কার্যকলাপে ভারতের ভূখণ্ড কখনোই ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।

এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আশঙ্কা করে বলেছেন, বাংলাদেশ যখন নতুন অধ্যায়ের দিকে একটা নতুন সূর্য দেখছে, বাংলাদেশর মানুষ স্বপ্ন দেখছে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করবে। ঠিক সেই সময় আবার নতুন করে বাংলাদেশের শত্রুরা হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠেছে। গত পরশু যে ঘটনা ঘটেছে (ওসমান হাদির ওপর হামলা) আমরা তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি এবং আমরা আশঙ্কা করছি যে এরকম আরও ঘটনা ঘটতে পারে।

গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের টার্গেট করা হচ্ছে
রোববার রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন বানচাল করার জন্য এবং গণঅভ্যুত্থান নস্যাৎ করার জন্য গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রতিচ্ছবি ছিল, যারা নায়ক ছিল, নেতা ছিল এবং যারা অংশগ্রহণকারী তাদের টার্গেট করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি এ ঘটনা কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে দোষারোপ করছে। আমরা মনে করে এই সময়ে আমাদের এই জায়গা থেকে সরে এসে একটা ন্যূনতম জাতীয় ঐক্য রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে বিভক্তি থাকলে ফ্যাসিস্ট শক্তি সবচেয়ে বেশি সুবিধাপ্রাপ্ত হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort