বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের সম্পদ বেড়ে যাওয়ার হার এখন অনুমানের চেয়েও দ্রুত বাড়ছে। ফলে, শিগগিরই পাঁচজন ট্রিলিয়নিয়ার পাবে বিশ্ব-এমনই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক পূর্বাভাসে। ব্রিটিশ উন্নয়ন সংস্থা অক্সফামের সর্বশেষ বৈষম্য প্রতিবেদন অনুসারে আগামী দশকের মধ্যে কম করে হলেও পাঁচজন ব্যক্তি ট্রিলিয়নিয়ার হবেন, যা ছাড়িয়ে যাবে গত বছরের অনুমানকেও। গত বছরের অনুমান ছিল, আগামী দশকের মধ্যে প্রথম অর্থাৎ একজন ট্রিলিয়নিয়ার পাবে বিশ্ব।
প্রতিবেদন বলছে, সম্পদের এই ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি ক্ষমতার একচেটিয়া কেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে, যেখানে শিল্প ও জনমতের ওপর ধারাবাহিকভাবে প্রভাব ফেলেছেন বিলিয়নিয়াররা।
মার্কিন বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্স অনুসারে, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক যার মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। তালিকায় এরপরেই রয়েছেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ, ওরাকলের প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন ও এলভিএইচএমের চেয়ারম্যান বার্নার্ড আর্নো। অক্সফামের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ রয়েছে, কেবল ২০২৪ সালেই বিলিয়নেয়ারদের মোট সম্পদ বেড়েছে ২ ট্রিলিয়ন ডলার। আর এই বৃদ্ধির পরিমাণ প্রতিদিন প্রায় ৫৭০ কোটি ডলারের সমান, যা আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ বেশি।
এদিকে বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, ১৯৯০ সালের পর থেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা খুব একটা বদলায়নি। অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক অমিতাভ বেহার বলেছেন, আমাদের বিশ্ব অর্থনীতির ওপর কিছু সুবিধাভোগী ব্যক্তির দখল এখন এমন উচ্চতায় পৌঁছেছে, যা একসময় অকল্পনীয় বলে মনে হতো। তিনি আরও বলেছেন, বিলিয়নেয়ারদের থামাতে এই ব্যর্থতার ফলই এখন শিগগিরই ট্রিলিয়নেয়ারদের জন্ম দিতে চলেছে। এ ক্ষেত্রে কেবল বিলিয়নেয়ারদের সম্পদ সঞ্চয়ের হারই বাড়েনি, বরং তাদের ক্ষমতাও বেড়েছে।
এ অর্থনৈতিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে বিভিন্ন দেশের সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম, যাতে শীর্ষ ১০ শতাংশ মানুষের আয় সবচেয়ে কম আয় করা মানুষের ৪০ শতাংশের বেশি না হয়। অক্সফাম প্রতিবেদনে সুপারিশ এসেছে, বৈশ্বিক কর নীতি জাতিসংঘের নতুন কর কনভেনশনের আওতায় আসা উচিত। যাতে করে বিশ্বের ধনী ব্যক্তি ও বিভিন্ন করপোরেশন তাদের ন্যায্য অংশ পরিশোধ করতে পারে তা নিশ্চিত করা যায়। একইসঙ্গে কম পরিমাণে কর দেওয়ার বিষয়টিরও বিলুপ্ত ঘটাতে হবে।