রোববার হরতাল চলাকালে শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশী হামলা, ব্যানার কেড়ে নেয়া ও একজন নেতাকে আটক করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
রোববার (২৯) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জে.এস.ডি (রব)’র কেন্দ্রীয় নেতা এ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, পপী রানী সরকার প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শনিবার ২৮ অক্টোবর শান্তিপূর্ণ ঢাকায় সমাবেশ বানচাল ও হামলার প্রতিবাদে আহত রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল-সন্ধ্যা দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। হরতাল সমর্থনে রোববার সকাল ৬.৩০ মিনিটে গণতন্ত্র মঞ্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা মিছিল বের করে। চাষাড়ায় যাওয়ার পর শান্তিপূর্ণ মিছিল চলাকালীন সময়ে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় গণসংহতি আন্দোলনের জেলা নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস আহত হয়। মিছিল থেকে পুলিশ সংগঠনের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা জে.এস.ডি. (রব) নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মোতালেব মাষ্টারকে আটক করে।
আমরা এই আটকের তীব্র নিন্দা জানাই। পরবর্তীতে আমরা যখন প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি সেখানে পুলিশ পুনরায় হামলা করে রাবার বুলেট ও ছোড়া গুলি নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান, এম এইচ প্রাপ্ত, ফতুল্লা থানার সংগঠক মুক্ত শেখ আহত হয়। এছাড়াও হরতালে পুলিশের গুলিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাহিদ ইসতিয়াক, যুবদল নেতা সুজন সম্রাট, ওয়াদুদ সাগরসহ প্রায় ১০ জন পুলিশি হামলার শিকার হন। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, হরতাল চলাকালীন সময়ে আমরা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর পাই নানা স্থানে যানবাহনে আগুন দেয়া হচ্ছে। ঢাকার মোহাম্মদপুর, তাঁতিবাজার ও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইট এলাকায় তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই আগুন আওয়ামী সন্ত্রাসীরাই লাগিয়ে আমাদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। নৈতিক জায়গা থেকে কলঙ্কিত করবার চেষ্টা করে তার দায় আমাদের উপর দেওয়ার চেষ্টা করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাসে আগুন দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যে মামলা এবং হয়রানি করছে। যা ২০১৩/১৪ সালেও সাংবাদিকরা দেখেছেন, এবং শনিবার সমাবেশবে গাড়িতে আগুন লাগানোর খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেখেছেন কারা এই কাজ করেছে। আমরা এইসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শনিবার ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং সেইদিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২৫ জন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। আমরা সাংবাদিকদের উপরে এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এবং এই হামলার সাথে যুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।
আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই ফ্যাসিষ্ট সরকার গুন্ডা বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করতে চায়। আমরা জোর দাবী নিয়ে বলছি, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধীকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগে চলমান গণতান্ত্রিক সংগ্রাম নারায়ণগঞ্জবাসীকে অংশ নেবার আহ্বান জানাই।