নারায়ণগঞ্জের বন্দরের লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পূণ্য স্নানোৎসব শুরু হচ্ছে। দু’দিন ব্যাপী এই উৎসবকে ঘিরে প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে শুরু হবে উৎসবের লগ্ন। লগ্ন শেষ হবে বুধবার রাতে।
স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠবে পূণ্যার্থীরা। মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পূণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নিবে। লগ্ন শুরুর পরপরই পুণ্যার্থীর ঢল নামে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। পাপমোচনের বাসনায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পূণ্যার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে লাঙ্গলবন্দ। এবার ১৮টি ঘাটে পূণ্যার্থীরা স্নান করছেন।
স্নানোৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে হাজারো পূণ্যার্থী নলিত মোহন সাধু ঘাট, নাসিম ওসমান ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজঘাট, মাকরী সাধু ঘাট, গান্ধী (শ্মশান) ঘাট, ভদ্রেশ্বরী কালী ঘাট, জয়কালী মন্দির ঘাট, রাজঘাট, রক্ষাকালী মন্দির ঘাট, পাষাণ কালী মন্দির ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, মণি ঋষিপাড়া ঘাট, ব্রহ্ম মন্দির ঘাট, দক্ষিণেশ্বরী ঘাট, পঞ্চপাণ্ডব ঘাট ও পরেশ মহাত্মা আশ্রম ঘাট দিয়ে পূণ্য স্নান করেন।
লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি সরোজ সাহা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘স্নানোৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পূণ্যার্থীরা এসেছেন। আমরা আশা করছি, এবার ১০ লাখ পুণ্যার্থী স্নানে অংশ নেবেন। নারীদের কাপড় বদলানোর জায়গা, বিশুদ্ধ খাওয়ার পানিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বি.এম. কুদরত-এ-খুদা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমরা প্রতিবছরের ন্যায় এবছর সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি খুব শান্তিপূর্ণ ভাবে উৎসবটি সম্পন্ন করতে পারবো।
উৎসব পালনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, স্নান উৎসবে যাতে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা, কেউ যাতে কোন ধারণের নাশকতা করতে না পারে, সে জন্য প্রায় ১২০০ পুলিশ সদস্য পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। সেই সাথে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে, ট্রাফিক পুলিশ থাকবে।
এদিকে, স্নানকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস থেকে ৫টি মেডিকেল টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘাট গুলো মেরামতে কাজ করেছে বিআইডব্লিউটিএ। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছে জনস্বাস্থ্য বিভাগ।