যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে বিধ্বংসী দাবানল আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্যালিসেডস ফায়ার ও ইটন ফায়ারের কারণে শহরের বেশ কিছু অংশে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। ধনীদের অভিজাত এলাকা ব্রেন্টউড এবং গেটি সেন্টার মিউজিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আগুন পৌঁছে যাওয়ার আশঙ্কায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেসে শুরু হওয়া দাবানল প্যালিসেডস ফায়ার ও ইটন ফায়ারের আকারে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্যালিসেডস ফায়ার ইতিমধ্যে ২৩,০০০ একর এলাকা পুড়িয়ে দিয়েছে, যা মাত্র ১১% নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। সান্তা আনা বাতাসের তীব্রতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে, যা আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।
এই দাবানলের কারণে এখন পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ১১ জন ইটন ফায়ারের এবং ৫ জন প্যালিসেডস ফায়ারের শিকার। ব্রেন্টউড এলাকায় বসবাসকারী আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার, লেব্রন জেমসসহ বহু সেলিব্রিটির বাড়ি ঝুঁকির মুখে। গেটি সেন্টার মিউজিয়ামে সংরক্ষিত ভ্যান গঘ, রেমব্র্যান্ট, মনেটের মতো বিখ্যাত শিল্পকর্ম আগুনের হুমকিতে রয়েছে।
দমকল বাহিনী আগুন নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের সাতটি প্রতিবেশী রাজ্য থেকে সাহায্য এসেছে। ১৫৩,০০০ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং আরও ১৬৬,০০০ জনকে সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম ফায়ার হাইড্রেন্টে পানির অভাব এবং জলাধারের সমস্যার জন্য তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস দমকল বাহিনীর বাজেট কাটার জন্য সমালোচিত হচ্ছেন। ইতিমধ্যে, দাবানল আক্রান্ত এলাকায় লুটপাট ঠেকাতে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
এই দাবানল লস অ্যাঞ্জেলেসবাসীর জন্য এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়ে উঠেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের আরও সমন্বিত পদক্ষেপ ও সম্পদের প্রয়োজন। প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপর্যয় থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তথ্যসূত্র : বিবিসি