রুদ্রবার্তা২৪.নেট: করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়ার প্রথম দিনেই নারায়ণগঞ্জের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে বেড়েছে যানবাহনের চাপ। এতে তৈরি হয়েছে যানজট। বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। তীব্র গরমে যানজটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই চিত্র দেখা যায়।
দীর্ঘ সময় পর গণপরিবহন চলাচলে বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে বিভিন্ন পরিবহনের বাস, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশার চলাচলও বেড়েছে। যানজটের ভোগান্তি নিয়েই যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত অনেকটা স্বস্তিতে চলাচল করা গেলেও সেতু পেরিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজটে পড়ছে যানবাহনগুলো। কাঁচপুর সেতু পেরিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিনহা গার্মেন্টসের সামনে, তারাব, বরাব, বিশ্বরোড এলাকায় যানজটের কবলে পড়ছেন চালক ও যাত্রীরা। তবে লাঙ্গলবন্দ সেতুর মেরামত কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের যানজট অনেকাংশে কমেছে। ঢাকা থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্তও তেমন যানজট নেই বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশ। তবে দূরপাল্লার বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়েছে।
এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান জানান, সকাল থেকেই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এ কারণে যানবাহন চলাচলে কিছুটা ধীরগতি হচ্ছে। তবে সময় গড়ার সাথে সাথে যানবাহনের চাপ কমে আসবে।
আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অর্থনৈতিক বিবেচনায় টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন শিথিলে সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে নারায়ণগঞ্জ শহরের পরিস্থিতি একেবারেই পাল্টে গেছে। লকডাউন শিথিল করায় জেলার পূর্বের অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গণপরিবহন ও মার্কেটগুলো চালু হওয়ায় সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে মানুষ ও যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে বাস কাউন্টারগুলোতে পরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে।
অন্যদিকে মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে শুরু হয়ে গেছে ঈদের কেনাকাটা। যে কারণে সকাল থেকেই ভিড় রয়েছে ক্রেতাদের। এদিকে লকডাউন চলাকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্টগুলো তুলে দেয়ায় সড়ক-মহাসড়কে চলছে অবৈধ ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা। মাস্ক ছাড়াই মানুষ রাস্তায় অবাধে চলাচল করছেন। অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই করোনাভীতি দেখা যায়নি। অনেক বাসে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে।
এদিকে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। গত চব্বিশ ঘন্টায় নতুন করে আরও ১৯০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার এই সংখ্যা ছিল ২৩৯ জন। তার আগের দিন ২৩১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নগরীর খানপুরে অবস্থিত করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ৮৭ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে আইসিউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭ জন।