রুদ্রবার্তা২৪.নেট: লকডাউনের মধ্যে বৈরি আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে দীর্ঘ বছরের দূষণ ও দখলে মৃতপ্রায় কালিয়ানী খালটি খনন করছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক)। শনিবার (৩ জুলাই) চতুর্থ দিনের মতো খনন কাজ চালিয়েছে নাসিক। বিশেষ এক্সাভেটর (ভেকু) দিয়ে এখন পর্যন্ত সদর উপজেলার বিসিক শিল্পনগরীর শাহী মসজিদ সংলগ্ন ব্রিজ থেকে ফকির গার্মেন্টস পর্যন্ত খনন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই খাল খননের সুফল পাচ্ছে নগরবাসী।
দখল ও দূষণের কারণে এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কালিয়ানী খালটি এখন মৃতপ্রায়। এই খালের কারণে ইউপির বেশ কয়েকটি এলাকায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় ভোগেন। এবার দখল হওয়া খালটির কারণে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের দেওভোগ ও মাসদাইরসহ কয়েকটি এলাকার মানুষ বর্ষা মৌসুমে পানিবন্দী হয়ে পড়েন। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৩ জুন নগরীর দেওভোগ ও মাসদাইর এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি দল খাল খননের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। কালিয়ানী খালটি দখল ও দূষণে প্রায় ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। পরবর্তীতে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর নির্দেশে খালটিকে দখল ও দূষণমুক্ত করতে মাঠে নামে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন।
গত ২৮ জুলাই বিসিক শিল্পনগরীর শাহী মসজিদ সংলগ্ন ব্রিজ থেকে ভেকু দিয়ে খাল খনন শুরু করে নাসিক। গত চারদিনে খাল খনন করার সুফল ইতিমধ্যে পেয়েছে বলে জানাচ্ছে নাসিক। খালটি খনন করাতে গত দু’দিনের বৃষ্টিতে মাসদাইর, দেওভোগসহ কয়েকটি এলাকায় অন্য সময়ের তুলনায় জলজট কম ছিল, বলছেন এলাকাবাসী ও সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। তবে খালের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে না পারলে এই সুফল দীর্ঘায়িত হবে না বলে মনে করেন তারা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ আফসানা আফরোজ বিভা হাসান বলেন, ‘মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে নগরীর মাসদাইর ও দেওভোগের কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণ খুঁজতে গিয়ে কালিয়ানী খালের খনন জরুরিভাবে প্রয়োজন বলে উপলব্ধি হয়। পরে আমরা খাল খনন শুরু করি। টানা চতুর্থ দিনের মতো খাল খনন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এই খননের ফলে নগরবাসী সুফল পেয়েছেন। খাল খননের পূর্বে যেরকম জলজট ছিল পরে তা অনেক কমে এসেছে। খালটি আরও খনন করা হলে আরও সুফল পাবে নগরবাসী।’
তিনি আরও বলেন, ‘খাল খনন করতে গিয়ে দুইপাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো বাধা হিসেবে সামনে এসেছে। স্থাপনাগুলোর অবৈধ দখলের কারণে খাল অনেকগুলো স্থানে প্রায় শুকিয়ে এসেছে। এই অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। মেয়র মহোদয়ের পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী উচ্ছেদ কার্যক্রমও চালাবে নাসিক।’
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজগর হোসেন এর আগে জানান, নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা থাকাকালীন সময় থেকে নগরীর দেওভোগ, মাসদাইরসহ আশেপাশের এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার সাথে কালিয়ানী খাল যুক্ত ছিল। অতিবৃষ্টিতে জমা হওয়া পানি ড্রেনেজ ব্যবস্থা মধ্য দিয়ে খালে গিয়ে পড়তো। কিন্তু দিনের পর দিন কালিয়ানী খালটি দূষণ ও দখলে মৃতপ্রায়। এখন পানি নিষ্কাশন তো দূরের কথা কালিয়ানী খালের আশেপাশের এলাকার পানি উপচে মাসদাইর দেওভোগ এলাকায় এসে পড়ছে। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শুধু দেওভোগ-মাসদাইরই নয় এনায়েতনগর ইউনিয়নেরও অনেকগুলো এলাকা এই খালটির কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়।