রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জে লকডাউনের প্রথম দিনে কঠোর ভূমিকায় রয়েছে প্রশাসন। সড়ক-মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এদিকে পরিবহন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন কারখানামুখী শ্রমিকরা। সরকারঘোষিত কড়া বিধিনিষেধের মধ্যেও পোশাক কারখানা খোলা রেখে পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে ােভ প্রকাশ করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশে ‘কঠোর লকডাউন’ শুরু হয়েছে। লকডউন কার্যকরে জেলায় জেলায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি বিধিনিষেধ কার্যকর করতে সেনাবাহিনীর ৫টি দল ও ৩ প্ল্যাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ২০ টিম ও জেলা পুলিশের ৩১ টিম কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য রোভার স্কাউট ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সকালে সরেজমিনে শহর ঘুরে দেখা যায়, শহরের মন্ডলপাড়া, ২ নম্বর গেট, চাষাঢ়া চত্ত¡র, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখসহ কয়েকটি স্থানে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া অন্যান্য সড়ক-মহাসড়কগুলোতেও রয়েছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল। সেন্ট্রাল খেয়াঘাট, চাষাঢ়া চত্ত¡রসহ কয়েকটি স্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ।
সকাল আটটার দিকে চাষাঢ়ায় কয়েকটি মডেল ডি ক্যাপিটাল, ফকির নিটওয়্যার, নিট কনসার্নসহ রপ্তানীমুখী পোশাক কারখানার শ্রমিকদের জটলা। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শ্রমিক পরিবহন না করায় শ্রমিকবাহী বাস থেকে থামিয়ে তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার সৈয়দপুরের ফকিরবাড়ি থাকেন জাকির হোসেন। চাকরি করেন সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলির পোশাক কারখানা নীট কনসার্নে। তিনি বলেন, ফকিরবাড়ি থেকে দ্বিগুন ভাড়ায় শহরের ডিআইটি আসতে ইজিবাইকে ওঠেন। পুলিশি বাধায় অর্ধেক রাস্তায় নেমে যেতে হয়। বাকি পথ হেঁটে এসে ডিআইটি থেকে কারখানার বাসে ওঠেন। তবে সেই বাস থামিয়ে দেওয়া হয় চাষাঢ়ায়। একই স্থানে সেন্সিবল গার্মেন্টসের যাত্রীবাহী তিনটি বাস থামিয়ে প্রায় দেড়শ’ শ্রমিককে নামিয়ে দেওয়া হয়।
ক্ষুব্দ-বিরক্ত পোশাক শ্রমিক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের ফ্যাক্টরি খোলা রাখছে কিন্তু গাড়িগুলো কেন বন্ধ রাখলো? সব যখন বন্ধ তাহলে ফ্যাক্টরিও বন্ধ দিক। আমাদের এইভাবে হয়রানি করার কোনো মানে নেই। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, লকডাউনের নামে আমাগো মতো গরীবরে যেন কষ্ট না দেয়।’
মডেল ডি ক্যাপিটালের শ্রমিক ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘কর্মস্থলে না গেলে চাকরি থাকবে না, না খেয়ে মরতে ববে তখন। মন্ত্রী, সচিব থেকে শুরু করে বড়লোকরা তাদের প্রাইভেট কার দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের তো প্রাইভেট করা নাই। এইযে আমরা পায়ে হেঁটে যাচ্ছি। এতে কি আমাদের হয়রানি হচ্ছে না, ভোগান্তি হচ্ছে না? প্রতিটি শ্রমিককে কর্মস্থলে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব সরকারের।’
চাষাঢ়ায় দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান ফারুক বলেন, সকাল ছয়টা থেকে আমরা দায়িত্বে আছে। জরুরি পরিষেবা, পণ্যবাহী গাড়িগুলো আমরা সহজে যেতে দিচ্ছি। প্রতিটি মানুষ ও গাড়ি চেকিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার েেত্র বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।