অবিশ্বাস্য, দর্শনীয় কিংবা নয়নাভিরাম ব্যাটিংয়ে দৃশ্য সরাসরি উপভোগ করল সিলেটবাসী। টেলিভিশনের পর্দায় সংখ্যাটা কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। টানা ছয় ম্যাচে ব্যর্থ ঢাকা জ্বলে উঠল নিজেদের সপ্তম ম্যাচে। ব্যাট হাতে রাজশাহীর বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরালেন লিটন দাস ও তানজিদ তামিম। দুজনেই পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। বিপিএলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুই ওপেনারের জুটি ছুঁয়ে ফেলেছে ২৪১ রান। দুজনের রেকর্ড জুটিতে ভর করে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ১৪৯ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস।
২৫৪ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় রাজশাহী। এই জয়ে বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের পুঁজি এবং রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড গড়ল ঢাকা।
বাজে ফর্ম নিয়ে সমালোচনায় থাকা লিটন দাস যেন জবাব দিলেন ব্যাট হাতে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ৭৩ রানের ইনিংসের পর রাজশাহীর বিপক্ষে আরও বিধ্বংসী রূপে দেখা গেল তাকে। ৫৫ বলে ১২৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে হাঁকালেন ১০টি চার ও ৯টি ছক্কা। মাত্র ৪৪ বলে সেঞ্চুরি তুলে বিপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন তিনি।
লিটনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাট করেছেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ৬২ বলে ১০৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। তানজিদের এটি বিপিএলে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে একশ করেছিলেন তিনি। তামিম ইকবালের পর তানজিদই একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার যিনি বিপিএলে দুটি সেঞ্চুরি করেছেন। দুই ওপেনারের সেঞ্চুরির দিনে রেকর্ড ভাঙার মিছিলে মেতে ছিল ঢাকা। উদ্বোধনী জুটিতে ২৪১ রান তুলে ভেঙেছেন ২০১৩ সালে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে শাহরিয়ার নাফীস ও লুই ভিনসেন্টের ১৯৭ রানের রেকর্ড। পাশাপাশি ম্যাককালাম ও গেইলের ২০১ রানের রেকর্ড জুটিও ছাড়িয়ে গেছেন তারা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাদের চেয়ে বড় জুটি আছে কেবল একটি। ঢাকার ২৫৪ রানের সংগ্রহ বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে রংপুর ও ২০২৪ সালে কুমিল্লার করা ২৩৯ রানের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন লিটন-তানজিদ।
পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ছন্দ হারায় রাজশাহী। ইনিংসের প্রথম ওভারেই পাকিস্তানি ওপেনার মোহাম্মদ হারিসকে ফিরিয়ে পথ দেখান আবু জায়েদ রাহী। পরে মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধর ঘাতক বোলিংয়ে ফেরেন এনামুল হক বিজয় ও সাব্বির হোসেন। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩৪ রান তোলে রাজশাহী। মাঝে রায়ান বার্ল ও ইয়াসির আলী রাব্বির জুটি কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট ছিল না। ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে যান বার্ল, তবে বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় রাজশাহী।