নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। নিহতরা হলেন-সিলেট জেলার যতি সরকারের স্ত্রী স্বপ্না রানী (৪৫) ও উপজেলার গোলাকান্দাইল নতুন বাজার এলাকার হারুন মিয়ার স্ত্রী মিনা আক্তার (৩৩)।
আহতের উদ্ধার করে স্থানীয় ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ছয়জন।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায়।
ডেমড়া, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রনে কাজ করছেন।
একটি সূত্র জানায়, মৃত্যু সংখ্যা বাড়তে পারে।
শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সেজান জুস কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কর্মচারী কাজ করেন। সাততলা ভবনে থাকা কারখানাটির নিচতলার একটি ফ্লোরের কার্টন থেকে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত। এসময় আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় কালো ধোঁয়ায় কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা ছোটাছুটি শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ ছাদ থেকে লাফ দেন। এসময় ঘটনাস্থলেই রানী ও মিনা আক্তার নামের দুই নারী নিহত হন।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহত স্বপ্না রানীর মেয়ে শ্রমিক বিশা রানী বলেন, অনেক শ্রমিক কারখানার ভবনের ভেতরে আটকা রয়েছেন। তাদের বের করা না হলে সবাই মারা যাবেন।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সোনারগাঁ-রূপগঞ্জ জোনের উপ-সহকারি পরিচালক তানহারুল ইসলাম জানান, হাসেম ফুড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় সন্ধ্যায় আগুনের সুত্রপাত ঘটে। মুহর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। খবর পেয়ে ডেমরা, কাঞ্চন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ফায়ার সার্ভিসের মোট ১১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুনের নেভানোর চেষ্টা শুরু করে। তিনি বলেন, এটি একটি ফুড বেভারেজ কারখানা। এখানে জুসসহ কোমল পানীয় তৈরি করা হয়। তিনি আরও জানান, আগুনে ওই কারখানায় অনেক শ্রমিক আটকা পড়েছে। তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আগুন পর ভবন থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে ২ নারী শ্রমিক আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। তবে কী কারণে আগুনের সুত্রপাত হয় তা জানা যায়নি।