রূপগঞ্জে ছাত্রদল নেতা অমিত হাসান অনিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে নিহত অনিকের বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন।
আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে কী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে রূপগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে অনিকের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আদালতে হাজির করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মামলার আসামির হলেন, ভুলতা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ভূইয়া (৪৩), সাধারণ সম্পাদক ইকবাল শিকদার (৪২), আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম (৪২), বাবু ওরফে কালাই বাবু (৩৫), রাসেল (৩০), শাহীন মিয়া (৪০), জাহাঙ্গীর মোল্লা (৩০), ওবায়দুর (৩০), আলাউদ্দিন (৪৫), মিজান (৪৫), রাজীব (২৬), রানা (২৩), রিফাত (২৭) ও ইমরান (৩২)। সেইসঙ্গে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী আমির হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ—যুবলীগের নেতাকর্মীরা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, অনিক রূপগঞ্জের একটি ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিল। পাশাপাশি সে একটি ওয়ার্ডের ছাত্রদলের কমিটির সহ—সভাপতি ছিল। গত ৩ নভেম্বর রূপগঞ্জের একটি মশাল মিছিলে অংশগ্রহণ করে। পরে সেই মিছিলে ছাত্রলীগ—যুবলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। একপর্যায়ে তারা অনিককে ধরে ফেলে এবং একটি চলন্ত ট্রাকের নিচে ফেলে হত্যা করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, রূপগঞ্জ থানা পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। তবে ঘটনার ১৯ দিন পার হলেও পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আমরা আজ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে মামলা করেছি।
উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে ঢাকা—সিলেট মহাসড়কে মশাল মিছিল বের করেন রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। মিছিলের শেষ পর্যায়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালান। এসময় ঘটনাস্থলে ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন কাঞ্চন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ—সভাপতি অমিত হাসান অনিক। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যান তিনি।