রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ফুড কারখানায় আগুনে ৫২ জনের নিহতের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা হত্যা মামলায় আটক সজীব গ্রæপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম, তার চার ছেলেসহ ৮ জনকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশদিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শনিবার (১০ জুলাই) বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের ভার্চুয়াল আদালতে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত শুনানি শেষে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে উঠানো হলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে আসামী পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল করে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকায় সজীব গ্রæপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাশেম ফুডস লিমিটেডের কারখানার ছয়তলার একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারান কারখানার ৫২ জন শ্রমিক-কর্মচারী। শুক্রবার রাতে এই ঘটনায় রূপগঞ্জের ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। রূপগঞ্জ থানা দায়ের করা ওই মামলায় আসামি করা হয় সজীব গ্রæপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম (৭০), তার চার ছেলে হাসিব বিন হাশেম (৩৯), তারেক ইব্রাহিম (৩৫), তাওসিব ইব্রাহিম (৩৩) ও তানজিম ইব্রাহিম (২১), সজীব গ্রæপের সিইও শাহান শাহ্ আজাদ (৪৩), হাশেম ফুডস লিমিটেডের ডিজিএম মামুনুর রশিদ (৫৪) এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কাম এডমিন মো. সালাহউদ্দিনকে (৩০)। শুক্রবার রাত ও শনিবার দুপুরে বিভিন্ন স্থান থেকে সজীব গ্রæপের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের আটকের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আনা হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও বেঁচে ফেরা শ্রমিকদের দেওয়া তথ্যমতে, ভবনের নিচতলায় প্রথমে আগুন লাগে। নিচতলায় ছিল ফয়েল প্যাকেটসহ বিভিন্ন কার্টন। এসব সহজেই দাহ্য হওয়ার কারণে মুহুর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভবনের অন্যান্য তলায়। শ্রমিকদের অভিযোগ, আগুন লাগার কিছুক্ষণ পরই ভবনের দু’টি দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগেই কিছু শ্রমিক কারখানা থেকে বেরিয়ে যান। আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়লে ভীত-সন্ত্রস্ত শ্রমিকরা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন ভবন থেকে। এই ঘটনায় আহত দুই নারীকে রাতেই পার্শ্ববর্তী ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মারা যান তারা। পরে গুরুতর আহত আরও এক পুরুষ শ্রমিক মারা যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ভবনের চতুর্থ তলা থেকে শুক্রবার দুপুরে ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।