রুদ্রবার্তা২৪.নেট: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অর্ধশতাধিক হতাহতের ঘটনায় হাসেম ফুডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ হাসেম ও ডিজিএম মামুনুর রশীদের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা করেছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। অগ্নিকান্ডের বিষয়ে নোটিশ দিয়েও কাক্সিক্ষত তথ্য না পাওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে শ্রম পরিদর্শক সৈকত মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জের উপমহাপরিদর্শক সৌমেন বড়ুয়া।
গত ৮ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় সজীব গ্রæপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানার ছয়তলার একটি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রাণ হারান কারখানার ৫১ জন শ্রমিক-কর্মচারী। ঘটনার পরদিন রাতে এই ঘটনায় রূপগঞ্জের ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। রূপগঞ্জ থানা দায়ের করা ওই মামলায় আসামি করা হয় সজীব গ্রæপের চেয়ারম্যান, তার চার ছেলে ও তিন কর্মকর্তাকে। তাদের মধ্যে ছয়জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এই মামলার পর শ্রম আদালতে প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে মামলা করলো কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
মামলার বিষয়ে অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের উপমহাপরিদর্শক সৌমেন বড়ুয়া এ প্রতিবেদককে জানান, শ্রম আইনের ৮০ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। শ্রম আইনের বিধিমালা অনুযায়ী যেকোনো দুর্ঘটনার বিষয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে সার্বিক বিষয়ে জানাবে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তবে হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নোটিশ দিয়েও কোনো তথ্য পায়নি অধিদপ্তর। বাধ্য হয়ে শ্রম আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন বলে জানান সৌমেন বড়ুয়া।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর শ্রম আইন মোতাবেক যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নিয়েছি। তাছাড়া তাদের কী কী অনিয়ম ছিল সে বিষয়েও তদন্ত চলছে। তদন্তের পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগেও ৩০ জুন কোভিড পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা না মানার কারণে হাসেম ফুডস লিমিটেডের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা করা হয়েছিল।’
হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনার তদন্তে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসনের পৃথক দু’টি তদন্ত দল কাজ করছে। এই ঘটনার তদন্তে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির সদস্যসচিব শ্রমিক নেতা অ্যাড. মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, ‘কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের আরও আগেই মামলা করা উচিত ছিল। বর্তমানে তারা যেই মামলাটি দায়ের করেছেন তা শ্রম আইনের ৮০ ধারায়, দুর্ঘটনার তথ্য না দেওয়ার অভিযোগে। হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা উচিত।’