‘উঠতি বয়সী তরুণ, যুবকদের নানাভাবে প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে নিতো একটি চক্র। তাদের সুন্দরী তরুণী সদস্যদের সংস্পর্শে এনে কৌশলে করানো হতো শারীরিক সম্পর্ক। ধারণ করে রাখা হতো ভিডিও। তা দেখিয়ে জিম্মি করে চলত অর্থ আদায়।’
এমন একটি চক্রের নারী সদস্যসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা থানা পুলিশ। শুক্রবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ফতুল্লা থানার শিয়াচর এলাকা থেকে রিয়াজ ও রুমা বেগম নামে চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রিয়াজের বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি থানার জামালপুর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামে। রুমা বেগম ফতুল্লার শিয়াচর এলাকায় ভাড়া থাকেন। মোক্তার সর্দার নামে তাদের কাছে জিম্মি থাকা এক যুবককেও এ সময় উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, স্বামীকে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের ঘটনায় মোক্তারের স্ত্রী বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। মোক্তার একজন রেস্তোরাঁ কর্মচারী।
ঘটনা সম্পর্কে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাত সাড়ে দশটার দিকে মোক্তার তার কাজ শেষ করে বাসায় যাচ্ছিলেন। স্ত্রীকে ফোন করেও তিনি বাসায় ফেরার কথা বলেন। পথে রুমা বেগমের সঙ্গে তার দেখা হয়। পূর্ব পরিচিত হওয়ায় রুমা তাকে তার সহযোগী রিয়াজের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আলাপ চলাকালীন মোক্তারকে রুমা শারীরিক সংসর্গের আহ্বান জানান। মোক্তার সে আহ্বানে সাড়া দিলে দুজনের যৌনকর্ম ভিডিও করে নেন রিয়াজ ও তার সহযোগীরা।
এরপর রিয়াজ ও তার সহযোগীরা মোক্তারকে জিম্মি করে লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। টাকা না দিলে মোক্তারের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। পরে বাধ্য হয়ে নিজের স্ত্রীকে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আসতে অনুরোধ করেন মোক্তার।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগীর স্ত্রী কৌশল অবলম্বন করে মোক্তারের নম্বর নিয়ে এসে পুলিশের কাছে দেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নম্বরটি ট্র্যাক করে। এ ছাড়া একটি বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে শিয়াচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় রুমা ও রিয়াজকে আটক ও মোক্তারকে উদ্ধার করে পুলিশ। যে ফোনের ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল, সেটিও জব্দ করে পুলিশ। জাকির নামে এক যুবক রিয়াজ ও রুমার সঙ্গে জড়িত। পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার অপরাধী। তাদের বিরুদ্ধে এমন আরও অভিযোগ আছে। অভিযানের সময় ঘটনাস্থলে মাদক সেবনের বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, সুন্দরী তরুণী দিয়ে ফাঁদ পেতে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের কাজটি তারা দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন। এ চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তাদেরও আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।