বহু বছরের গবেষণার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ার একটি টিকা অনুমোদন দিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (৬ অক্টোবর) জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্যাকসিনটি অনুমোদনের ঘোষণা দেনয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। ম্যালেরিয়া গবেষক হিসেবে আমি আমার কর্মজীবন শুরু করেছিলাম। আমি এতদিন এই পুরোনো ও ভয়ানক রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা আবিষ্কারের অপেক্ষায় ছিলাম। আজ সেই দিন, এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। ‘
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ম্যালেরিয়ার চার ডোজের এই প্রথম টিকাটি উদ্ভাবন করেছে খ্যাতনামা ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে)।
মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ায় প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এর অর্ধেকই মারা যায় আফ্রিকার দেশগুলোতে। তবে এ রোগ প্রতিরোধে এতদিন অনুমোদিত কোনো টিকা ছিল না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আফ্রিকার তিন দেশ ঘানা, কেনিয়া ও মালাবিতে ২০১৯ সাল থেকে পরিচালিত একটি পাইলট কর্মসূচির ফলাফলের ভিত্তিতে ডব্লিউএইচও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ওই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আফ্রিকার দেশ তিনটিতে ম্যালেরিয়ার ২০ লাখেরও বেশি ডোজ টিকা দেওয়া হয়। এখন থেকে আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল এবং ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব রয়েছে, বিশ্বের এমন সব অঞ্চলে শিশুদের এই টিকা দেওয়া যাবে। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের এই টিকা দুই বছর বয়স থেকেই দেওয়া যাবে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘ সময় ধরে ম্যালেরিয়ার এ টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে। চার বছরের বেশি সময় ধরে আফ্রিকার ছোট বাচ্চাদের ওপর চলা পরীক্ষায় এর সীমিত কার্যকারিতা পাওয়া যায়। সাধারণ ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে এটি ৩৯ ভাগ কার্যকর, আর গুরুতর ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে এর কার্যকারিতার হার ২৯ ভাগ।
কিন্তু গত আগস্টে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের (এলএসএইটটিএম) নেতৃত্বে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যখন ছোট শিশুদের এই টিকা ও অ্যান্টিম্যালেরিয়াল ওষুধ দেওয়া হয় তখন এটি হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর হার ৭০ ভাগ কমিয়ে দিতে সক্ষম।