রোববার কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন গুস্তাভো পেত্রো। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো ডানপন্থিকে পেসিডেন্ট বানায় দেশটির জনগণ।
আর এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কলম্বিয়ানরা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করেন ফ্রান্সিয়া মার্কুইয়েজকে।
তিনি একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী।
ফ্রান্সিয়া মার্কুইয়েজ জন্ম নিয়েছিলেন দুর্গম অঞ্চলের একটি দরিদ্র পরিবারে।
নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করে কিশোরী বয়সে একটি সোনার খনিতে কাজে যোগ দেন ফ্রান্সিয়া। এরপর তিনি মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন।
ফ্রান্সিয়া যখন বেড়ে ওঠেন এবং কিশোরী বয়সের সময় পার করেন তখনও কেউ ভাবতে পারেননি তিনি একজন রাজনীতিবীদ হবেন।
ফ্রান্সিয়া জন্ম নেন ১৯৮১ সালে কলম্বিয়ার ককা অঞ্চলে। জন্মের পর শুধুমাত্র মায়ের কাছেই বড় হয়েছেন তিনি। ১৬ বছর বয়সে ফ্রান্সিয়া নিজেই সন্তানের জন্ম দেন।
তবে ছোটকাল থেকেই প্রতিবাদী ছিলেন ফ্রান্সিয়া।
১৯৯৬ সালে যখন তার অঞ্চলে অবস্থিত ওভেজাস নদীতে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ড্যাম সম্প্রসারণের জন্য একটি প্রজেক্ট শুরু করতে চেয়েছিল তখন সেটিতে বাঁধা দেন ফ্রান্সিয়া।
কারণ সেখানে ড্যাম তৈরি হলে তার আফ্রিকান-কলম্বিয়ান সম্প্রদায়ের ওপর এর মারাত্বক প্রভাব পড়ত।
১৭ শতক থেকে সেই অঞ্চলে বাস করতে থাকা আফ্রিকান-কলম্বিয়ানরা কয়েক প্রজন্ম ধরে কৃষি এবং মাইনের শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করত।
প্রায় ২০ বছর নিজের সম্প্রদায়ের জন্য বেশ কয়েকটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির বিরুদ্ধে লড়াই করেন তিনি।
ফ্রান্সিয়া প্রথম পরিচিতি পান ২০১৪ সালে। সে বছর অবৈধ খনিগুলোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ৮০ জন নারীকে নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সামনে আসেন তিনি। সেখানে ২০ দিন অবস্থান করে দাবি আদায় করে বাড়ি ফেরেন।
ফ্রান্সিয়া এরপর আইনের ওপর ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সামনে বক্তব্য দিয়েছেন।
২০১৮ সালে ফ্রান্সিয়া পরিবেশবীদদের নোবেল খ্যাত গোল্ডম্যান প্রাইস জেতেন। সে বছরই বিবিসির সেরা ১০০ নারীর তালিকায় জায়গা করে নেন তিনি।