শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

মর্গ্যান স্কুলে অ‌ধ্যেক্ষের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ১০.০৫ এএম
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি স্বনামধন্য বিদ্যাপিঠ হিসেবে পরিচিত মর্গ্যান স্কুল এন্ড কলেজ। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে পাল্টে গেছে এর চিত্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অধ‌্যক্ষ এবং সহকারী প্রধান শিক্ষিকার মল্ল লড়াই এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।
প্রতিনিয়তই বের হয়ে আসছে নানা অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। তবে এবার বের হয়ে এসেছে মর্গ্যান স্কুলে দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ।
জানা গেছে, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাতিল হয়েছে পুর্বে থাকা গর্ভনিং বডির কমিটি। বর্তমানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। আর তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বেড়েছে জবাবদীহীতা মূলক কার্যক্রম। আর সে সুবাধেই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কথা বলে চাকুরী হারানোর শংকা ও নানা ভয় থাকলেও কেউ কেউ মুখ খোলতে শুরু করেছেন। যাদের মধ্যে রয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।
যদিও সূত্র জানিয়েছে, ইতমধ্যেই অধ‌্যক্ষ আবুল কালাম আজাদও প্রতিষ্ঠানটিতে প্রভাব বিস্তার করে তার নিজের মত জিম্মি করে রেখেছে। তার অনিয়ম-বানিজ্য বিষয়ে কেউ যদি খোঁজ নিতে যায়, তখনই তার পক্ষেও তৈরী করে রাখেন বেশকয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক। যারা বিনা বাধায় পরিকল্পিভাবে গাইতে থাকে প্রধান শিক্ষকের পক্ষে নানা সাফাই।
আর এবার সেই অধ‌্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগের তীর ছুড়ে মেরেছে বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। এমনকি, ছেলে-মেয়েকে জিম্মি করে জোড়পুর্বক পদত্যাগের স্বীকার হয়েছে বলে দাবী করেছেন সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তার।
সহকারী প্রধান শিক্ষিকা ও সাধারণ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের স্বাক্ষরিত এমন একটি লিখিত অভিযোগে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও বানিজ্যের কথা। উল্লেখ করা হয়েছে গত ২১ আগস্টে কোচিং বানিজ্যের সাথে জড়িত থাকা কিছু শিক্ষক ও অধ্যক্ষ নিজেদের ব্যচের শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে মাঠে নানা অপ্রত্যাশিত স্লোগান দেয়ানো হয়। এছাড়াও সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তার চিকিৎসা ছুটিতে থাকা সত্বেও জোড়পুর্বক তার বাসায় কিছু বহিরাগত ছেলে-মেয়ে প্রবেশ করে প্রাণনাশের হুমকী দেয়। এসময় সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লায়লা আক্তারের ছেলে-মেয়েকে জিম্মি করে জোড়পুর্বক পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করে। এরপর থেকেই নানা অভিযোগ তোলা হয় সহকারী প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। যদিও তার দাবি, আগে কখনই যেসব অভিযোগের কথা তারা জানায়নি। কিন্তু এখন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে, মিথ্যা ও বানোয়াট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ তোলছে। যার কোনোটিরই তথ্য প্রমানস্বরূপ দেখাতে পারবেনা। কারণ হিসেবে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা জানায়, আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব তার উপর বর্তায় না। তিনি শুধু একাডেমিক বিষয়গুলো দেখেন।
এদিকে প্রথমত, অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের অনিয়মের বিষয়ে জানা যায়, তিনি ব্যবস্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় তার ব্যর্থতার কারণে মাধবধী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এমপিও পদ ছেড়ে নন এমপিও পদে চুক্তিভিত্তিক হিসাবে যোগদান করেন। মাধবধী অগ্রনি ব্যংক তাকে ব্যংক খেলাপী ঘোষণা করেন।
দ্বিতীয়, তার নিয়োগ কমিটিতে ডিজির প্রতিনিধি ছিল না। সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী আবেদনের সময় ১৫দিন দেয়ার নিয়ম থাকলেও ১০দিন দেয়া হয়। এছাড়াও নিয়োগ প্রক্রিয়া ৬ মাসের মধ্যে শেষ করার নিয়ম থাকলেও তার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৮ মাসের মধ্যে করা হয়।
তৃতীয়, বিধিমালাতে নিষেধ থাকা সত্বেও অধীনস্ত ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষকের নিকট থেকে প্রায় ১০ লক্ষেরও অধিক টাকা ধার হিসেবে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। বিনিময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নানা প্রশাসনিক সুযোগ-সুবিধার কথা রয়েছ। এতে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক র্কাযক্রম ভেঙ্গে পড়ছে বলেও দাবী সাধারণ শিক্ষকদের।
চর্তূথ, কোনো প্রকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও সভাপতি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে না অবগত করেই তিনি তার পরিচিত কয়েকজনকে নিয়োগ প্রদান করেছেন।
পঞ্চম, কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পরে এবং পুর্বে কমিটির ২ থেকে ১জন সদস্য স্কুলের সকল বিষয়ে অধ্যক্ষের যোগসাজসে হস্তক্ষেপ করেন এবং ক্লাস চলাকালীন সময়ে ক্লাস পর্যবেক্ষন করেন যা নিয়ম বর্হিভূত।
ষষ্ঠ, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের নিয়োগপত্রে তার বেতন ৩৫ হাজার টাকার কথা উল্লেখ থাকলেও সে প্রতষ্ঠান থেকে পরবর্তিতে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন।
সপ্তম, তিনি গভর্নিং বডি বিলুপ্ত হওয়ার পুর্বে বাসা ভাড়া বাবদ ১ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। তার অনিয়মে অতিষ্ট হয়ে মর্গ্যান স্কুল এন্ড কলেজের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্য্যক্রম মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে পড়ছে। তাই অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন, তাদের সন্তানদের জোড়পুর্বক শিক্ষা র্কায্যক্রম বাদ দিয়ে আন্দোলনে যেতে বাধ্য করেছেন।
অষ্টম, আরো অভিযোগ উঠেছে লেকচার গাইড প্রকাশনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য ১৭১টি গাইড সৌজন্য সংখ্যা দেয়। যা সাহিত্য কথা লাইব্রেরীতে বিক্রয় করে ফেলে।

অপরদিকে, এ সকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অস্বীকার করেন মর্গ্যান স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। তবে টাকা ধারের বিষয়টি তিনি স্বীকার করে জানান, টাকা ধার নিতেই পারি। দরকারে নিয়েছি। কোনো অনিয়ম তিনি করেনি। আর টাকা উত্তোলন তিনি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিচ্ছেন। তা অয়িসিয়ালী নেয়া হয়। কোনো লোকচুরী নয়। সৌজন্য বইয়ের ব্যপারে তিনি জানান স্কুলেই আছে। শিক্ষদেরও দেয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2021 rudrabarta24.net
Theme Developed BY ThemesBazar.Com

sakarya bayan escort escort adapazarı Eskişehir escort