রূপগঞ্জে ভূলতা পুলির ফাঁড়ির পাশেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ঝুঁকিপূর্ণ কাঁচাবাজারের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণসহ যাত্রীদের। উপজেলার গোলাকান্দাইল সাওঘাট হইতে ভূলতা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশের এক পাশে কাঁচাবাজার আরেক পাশে কাঁপড়, জুতা, ফলের দোকানের দখলেই থাকে। এসব স্থানে প্রতিদিন বাজার বসায় অরক্ষিত মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
দেশের সড়ক-মহাসড়কের উপর স্থাপিত কাঁচাবাজার ও ভাসমান দোকানপাট উচ্ছেদ করে মূল সড়ক উদ্ধার করে গাড়ি চলাচলের জন্য স্বচ্ছল করতে বলেছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কিন্তু মানছেন না সেই দিক-নির্দেশনা এই এলাকার প্রশাসন।
জনদূর্ভোগ লাঘবে ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপগঞ্জ তথা নারায়ণগঞ্জের সর্ববৃহত প্রকল্প ভূলতা ফ্লাইওভারের ঢাকা-সিলেট জাতীয় সড়ক অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন ঘোষণা করার পর যান চলাচলের জন্য উড়াল সেতুটি খুলে দেন নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক।
তবে ভূলতা ফ্লাইওভারের নিচের চারলেনের সুফল কেড়ে নিচ্ছে মহাসড়কে নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা। মহাসড়কের নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা বা বাজার বসা সম্পূর্ণ অবৈধ থাকলেও সড়কের উপর ও সড়ক ঘেঁষে রোডস এন্ড হাইওয়ের জায়গা ও জনপথ বিভাগের জায়গা দীঘদিন ধরে স্থানীয় চাঁদাবাজদের দখলে রয়েছে।
প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মহাসড়ক দখল করে বাজার বসানোর ফলে মহাসড়কটি প্রতিনিয়ত অনিরাপদ হয়ে উঠছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঢাকা-সিলেট মাহাসড়কের দুই পাশে বাজার বসে। সেখানে মাছ, তরিতরকারি ও নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালসহ কাঁপড়, জুতা ও ফল নিয়ে বসেন দোকানদাররা। বাজার বসার পর সড়কে যান চলাচলের জন্য জায়গা থাকে খুবই কম।
এসব স্থানে এসে যানবাহনগুলোকে চলতে হয় অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে। ফলে মহাসড়কের মতো ব্যস্ত রাস্তায় এ স্থান গুলোতে এসে যানজট পোহাতে হয় দূরপাল্লার গাড়িগুলোকে। ভ্যানে করে কিছু ভ্রাম্যমাণ দোকানিদের রাস্তার মাঝে অবস্থান করতে দেখা যায়। এতে ক্রেতা ও বিক্রেতা দুই পক্ষই থাকেন সড়ক দুর্ঘটনার চরম ঝুঁকিতে। একটু অসাবধানতায় মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।
সম্প্রতি এসব স্থানে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। এসব বাজারের চাঁদাবাজদের ভাষ্য, মহাসড়কে বাজার বসা বৈধ না অবৈধ এটা তাদের জানা নেই। তারা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেই এসব বাজারের অনুমতি পেয়েছেন। জায়গার অভাবেই মূলত সড়কের উপর বাজার চলে আসে।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এসব অবৈধ বাজার চাঁদাবাজদের জন্য মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ করতে গেলেও হিমশিম খাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ।
ভূলতা হাইওয়ে পুলিশের টিআই সালাউদ্দিন জানান, মহাসড়কের নিরাপত্তার স্বার্থে সেখান থেকে বাজার সরিয়ে দিতে আমরা প্রতি সপ্তাহেই তাদেরকে সতর্ক করার পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করছি।
টিআই সালাউদ্দিন আরো বলেন, ভূলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ যদি আমাদেরকে একটু সহযোগিতা করতেন তাহলে আমরা এসব অবৈধ বাজার মহাসড়ক থেকে পুরোপুরি উচ্ছেদ করতে সক্ষম হবো। তবে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।